প্রতিবেদন : ভিনরাজ্যে ‘জামাই আদর’ করে ডেকে নিয়ে গিয়ে বাংলার দক্ষ শ্রমিকদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মঙ্গলবার বর্ধমানে প্রশাসনিক জনসভা ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে বিজেপি-রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর স্পষ্ট কথা, বাংলার শ্রমিকরা এমনি এমনি বাইরে নেই। কারণ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা দক্ষ। তাই তাঁদের জামাই আদর করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন বাংলায় কথা বলার জন্য তাঁদের উপর অত্যাচার নেমে আসছে। বাংলার শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হলে আমরা মুখ বুজে সহ্য করব না।
আরও পড়ুন- ট্রাম্পের শুল্কবাণে অস্থিরতা শেয়ার বাজারে! পড়ছে সেনসেক্স-নিফটি
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন কেন ওড়িশা, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, গুজরাতে বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে? সব জায়গাতেই একটা বিষয় ‘কমন’। বাংলা বলার অপরাধে অত্যাচার করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, বাংলা থেকে ২২ লক্ষ শ্রমিক বাইরের রাজ্যে কাজ করেন। ওঁদেরকে দয়া করে নিয়ে যাওয়া হয়নি। কেউ সোনার কাজ ভাল করেন। কেউ জামা-কাপড় ভাল তৈরি করেন। কেউ কনস্ট্রাকশনের কাজ ভাল পারেন। ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জামাই আদর করে। কিন্তু তাঁদের ভাগ্যে আজ জুটছে লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অত্যাচার, অনাচার। তাঁর কথায়, ভিনরাজ্যের দেড় কোটি মানুষও এই বাংলায় রয়েছেন। তাঁদের উপর এখানে কোনও অত্যাচার করা হয় না। তাহলে কেন বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে? আমাদের মানুষকে কি মানুষ বলে মনে করেন না? বাংলার ছাত্রছাত্রীদের মেধা, গবেষকদের মেধাকে সম্মান করে সারা বিশ্ব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট গুজরাতের লোকেদের কোমরে শিকল বেঁধে পাঠিয়ে দিয়েছেন। বাংলার মেধাকে তাড়াতে পারে না। ওদের ছাড়া হার্ভার্ড, কেমব্রিজ চলবে না। নাসা থেকে ভাষা ওঁরাই আছে। এদিন, বর্ধমানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফিরে আসার আহ্বান করেন ফের একবার। বলেন, ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য শ্রমশ্রী প্রকল্প করেছে রাজ্য সরকার। পোর্টালও চালু করেছে। ফিরে এলেই তাঁদের ৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। যতদিন না শ্রমিকেরা নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন— একবছর পর্যন্ত প্রতি মাসে তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। শ্রমিকের সন্তানদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী-সহ সমস্ত সরকারি প্রকল্প আওতায় তাঁদের নিয়ে আসা হবে।