ঘরে ফিরল টাইগার-ভুরো, আবেগাপ্লুত দিল্লির চাঁদনি

ঘরে ফেরার আনন্দে উদ্বেলিত ওরা। বাঁধ মানছে না চোখের জল। আবেগাপ্লুত রাস্তার হকার থেকে শুরু করে অটোচালক-সহ গোটা এলাকার অধিকাংশ মানুষই

Must read

প্রতিবেদন: ঘরে ফেরার আনন্দে উদ্বেলিত ওরা। বাঁধ মানছে না চোখের জল। আবেগাপ্লুত রাস্তার হকার থেকে শুরু করে অটোচালক-সহ গোটা এলাকার অধিকাংশ মানুষই। দিল্লির চাঁদনি চকের কাছে অঙ্গুরিবাগ হনুমান মন্দির এলাকায় এখন শুধুই খুশির হাওয়া। কারণ? ১৩ দিনের বন্দিজীবন কাটিয়ে এলাকায় ফিরে এসেছে সকলের প্রিয় টাইগার, ভুরো। ফেরার প্রতীক্ষায় কালু। রাজধানীর চাঁদনি এলাকার রীতিমতো পরিচিত পথকুকুর। জনপ্রিয়তার নিরিখে অবশ্য সামান্য এগিয়ে রয়েছে কালো-বাদামি রঙা ১৪ মাসের টাইগারই। এলাকায় ফিরেই সে লাফিয়ে উঠে পড়ল ভেন্ডার নন্দেশ্বর সাহুর কোলে। ৬২ বছরের সাহুজির বুকে মুখ ঘষে লেজ নাড়িয়ে আত্মহারা টাইগার। কৃতজ্ঞতায় ভরা দু’চোখ। হবে না-ই বা কেন, জন্মের পর থেকেই টাইগারকে যত্ন-আত্তি করেছেন বিহার থেকে আসা নন্দেশ্বর সাহু। রাতের পর রাত ফুটপাতে তাকে আগলে রেখে ঘুমিয়েছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এলাকার প্রায় ৪৭টি পথকুকুরকে স্বাধীনতা দিবসের আগে পাকড়াও করে পাঠানো হয়েছিল কাছেই টিমারপুরের অ্যানিমাল বার্থ কন্ট্রোল সেন্টারে। তারপরে একে একে নির্বীজকরণ, কৃমিমুক্ত করা এবং প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিনেশন। সযত্নে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে সারমেয়দের নখও।

আরও পড়ুন-কলেজিয়ামের সুপারিশ নিয়ে ভিন্নমত এবার সুপ্রিম কোর্টেই, আঞ্চলিক ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন

সবকিছুর শেষে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই যখন পুরসভার গাড়ি জৈন মন্দির এলাকায় ছেড়ে দিয়ে গেল টাইগার, ভুরো-সহ ৬টি পথকুকুরকে, তখন চোখের জল সামলাতে পারলেন না সাহুজি। শুধু তিনি কেন, আনন্দাশ্রুতে ভাসলেন ফুলবিক্রেতা ফুল বিক্রেতা পঙ্কজ চৌধুরীও। টাইগারের প্রত্যাবর্তন যেন পরিবারের কোনও সদস্যের ফিরে আসা।
আসলে ১৩ দিন ধরে টাইগারকে খুঁজে বেড়িয়েছেন নন্দেশ্বর, পঙ্কজরা। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন টাইগার আর তার সঙ্গীদের পথ চেয়ে। তাই রবিবার পুরসভার খাঁচাগাড়ি চেপে ঘরে ফেরা মাত্রই টাইগারকে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন নন্দেশ্বর সাহু থেকে শুরু করে চাঁদনি এলাকার হকার, দোকানদার, অটোচালকরাও। কাগজের প্লেটে স্ন্যাক্স সাজিয়ে দিয়ে জানিয়েছেন উষ্ণ অভ্যর্থনা। এলাকায় শুধুই খুশির হাওয়া। কেউ বলছেন, ফিরে এসেছে আমাদের ঘরের লোক। কেউ বলছেন, এখন সবাই মিলে আনন্দ কর। আবার কারও মন্তব্য, চেহারাটা সত্যিই খারাপ হয়ে গিয়েছে। কারও কথায়, আপদে-বিপদে আমাদের রক্ষা করে টাইগারই। খুশি আর কৃতজ্ঞতায় তখন লেজ নেড়ে অস্থির টাইগার। খাবার প্লেটের দিকে তাকানোর সময় কোথায়!
ফেরার অপেক্ষায় আরও বেশকিছু পথকুকুর। কিন্তু ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে আর তর সইছে না তাদের। প্রাণপণে রডের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টায় মরিয়া তাদেরই অন্যতম কালু।

Latest article