আমরা শক্তি আমরা বল আমরা ছাত্রদল

বাংলার ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে ২৮ অগাস্ট একটি স্মরণীয় দিন। জাতীয়তাবাদী ছাত্র-ছাত্রীরা এই দিনটিতে (২৮ অগাস্ট) একত্রিত ভাবে প্রতিষ্ঠাদিবস উদযাপন করে।

Must read

বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়: বাংলার ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে ২৮ অগাস্ট একটি স্মরণীয় দিন। জাতীয়তাবাদী ছাত্র-ছাত্রীরা এই দিনটিতে (২৮ অগাস্ট) একত্রিত ভাবে প্রতিষ্ঠাদিবস উদযাপন করে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্নের সময়, আমি বেশ কয়েক বছর সভাপতি হিসাবে এই দিনটি সবাইকে নিয়ে পালন করেছি।
কিছু পুরনো কথা মনে পড়ে, তখন আমি আশুতোষ কলেজের ছাত্র। কলেজের গেটে ছাত্র ধর্মঘট পালন করছি। সিপিএমের গুন্ডারা অরূপকে (আমার সহপাঠী) তুলে নিয়ে যাচ্ছিল ওদের ডেরায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অরূপকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার করলেন সিপিএমের গুন্ডাদের হাত থেকে। আজ অরূপ বেঁচে নেই, পরবর্তীকালে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল।
একবার ভবানীপুর এডুকেশন কলেজ নির্বাচনের দিন দক্ষিণ কলকাতার ছাত্র সভাপতি হিসাবে কলেজ গেটে পৌঁছলাম। সিপিএমের তৎকালীন বাদশা আলম, লালু আলম দলবল নিয়ে আক্রমণ করল। আমাদের রয়েড স্ট্রিটের চন্দনকে ক্ষুর মারল। মাথা ফাটল আমাদের বহু সাথীর। সেদিন আমার সাথী ছিলেন বি এন ঠাকুর (সদ্যপ্রয়াত)। আজ ২৮ অগাস্ট তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান।
সাউথ কলকাতা ল’ কলেজ নির্বাচনের দিন, সিপিএমের গুন্ডাদের হাতে আমি, বি এন ঠাকুর, অ্যাডভোকেট অমিয় পাত্র নিগৃহীত হই, সালটা ছিল ১৯৮৭-এর ১৯ নভেম্বর, ইন্দিরা গান্ধীর জন্মদিন। তৎকালীন নেতারা আমাদের মার খেতে দেখে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো এগিয়ে আসেনি। এই জন্যই মমতা বন্দোপাধ্যায় আজ দেশের জনপ্রিয়তম নেত্রী।

আরও পড়ুন-ছাত্ররাই সমাজ পরিবর্তনের আলো

আমার মনে পড়ে কখনও ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট, কখনও মহম্মদ আলি পার্ক, কখনও সিঙ্গুরের অনশন মঞ্চে বা কখনও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে, আমরা ২৮ অগাস্ট পালন করেছি।
প্রতিবারই আমাদের প্রধান বক্তা মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিশাল ছাত্র-ছাত্রী সমাবেশে মমতাদি বলতেন কীভাবে বাংলা ছাত্র সমাজকে এগিয়ে যেতে হবে।
মমতাদি শুরু করতেন, যোগমায়া দেবী কলেজে ছাত্রী থেকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনার কথা, তারপর বহু লড়াই সংগ্রাম, আন্দোলন। সিপিএমের হাতে বারবার আক্রান্ত হওয়ার পরও বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্র সমাজ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা।
আমি বিশ্বাস করি, ছাত্র-ছাত্রীরা রাজনীতিতে যোগদান করেন নৈতিকতা, আদর্শ, নীতি, মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে। তাই আজও ভারতীয় রাজনীতিতে যদি কেউ রোল মডেল হন, সেটা নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দোপাধ্যায় চান আগামী প্রজন্মের মধ্যে থেকে উঠে আসুক ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব, যারা কিনা আগামী দিনে ভারতবর্ষকে নেতৃত্বে দেবে।
আমার চোখে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের অন্যতম সেরা নেতা, যিনি সুবক্তা, সুসংগঠক এবং সাবলীলভাবে অনেকগুলি ভাষায় নিজের বক্তব্য পেশ করেন। অভিষেক তারুণ্যের প্রতীক, ওঁকে ঘিরে ছাত্র-যুবদের উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো।
আশা রাখব ২৮ অগাস্ট মমতা বন্দোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্য বক্তারা আগামী দিনের ছাত্র-ছাত্রীদের পথচলার দিশা দেখাবেন, যেভাবে ২০১১ সালে বামফ্রন্টকে পরাজিত করে মা-মাটি-মানুষ সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আগামী বাংলা ও বাঙালির স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলাবিরোধীদের পরাজিত করে রাজ্য ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

Latest article