প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মেনে স্বাস্থ্য ও জীবনবিমায় মকুব করা হল জিএসটি (GST)। কিছু ক্ষেত্রে কমানোও হয়েছে। ১২% ও ২৮%-এর স্ল্যাব তুলে দিয়ে নতুন তিনটি স্ল্যাব ৫%, ১৮%, ও ৪০% করা হয়েছে। তবে জিএসটির (GST) পরিমাণ ঠিক কী দাঁড়াল, বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে রাজ্যের প্রাপ্য অনুপাত খতিয়ে দেখছেন।
গত ২ অগাস্ট স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমায় জিএসটি প্রত্যাহার করতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর বুধবারের জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে সব রাজ্যের প্রতিনিধিরাই সেই সুরে আলোচনা করেন। বাংলার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যের তরফে এই দাবি নিয়ে জোরালো বক্তব্য পেশ করেন। যার ফলস্বরূপ সর্বসম্মতিক্রমে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিঃসন্দেহে এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলার সাধারণ মানুষের দাবির জয়। পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে চন্দ্রিমা মনে করিয়ে দেন, এর ফলে প্রায় ৪৮ হাজার কোটির রাজস্ব ঘাটতি হবে। এই ঘাটতি মেরামত করতে কোনওভাবেই রাজ্যের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ কমানো যাবে না। চন্দ্রিমার দাবির সমর্থনে সোচ্চার হন পাঞ্জাব, কেরল, তামিলনাড়ু, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল, কর্নাটকের অর্থমন্ত্রীরাও। কিন্তু স্পষ্টভাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কোনও প্রতিশ্রুতি না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ রাজ্যগুলি। চন্দ্রিমা জানিয়ে দেন, রাজ্যগুলির সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হলে তা মেনে নেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন-ভাষাসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ধর্মতলায় তৃণমূলের অবস্থান-প্রতিবাদ কর্মসূচি
এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জিএসটির ১২% ও ২৮%-এর দুটি স্ল্যাব থাকছে না। পরিবর্তে ৫%, ১৮% ও ৪০%-এর নতুন তিনটি স্ল্যাব তৈরি করা হল। ৪০% স্ল্যাবটি মূলত লটারি, তামাকজাত দ্রব্য ও বিলাসবহুল দ্রব্যের উপর রাখা হয়েছে। নয়া জিএসটি লাগু হবে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে। জিএসটির নয়া স্ল্যাবের দরুন দাম কমতে পারে ১৭৫টির বেশি দ্রব্যের। ৩৩টি জীবনদায়ী ওষুধের জিএসটি শূন্য হয়েছে। পাউরুটিতেও থাকছে না জিএসটি। কেন্দ্রীয় সরকারের জিএসটি নীতি নিয়ে বারেবারেই বাংলা-সহ অন্যান্য রাজ্য প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রবল চাপের মুখে সাধারণ মানুষের দাবিকেই মান্যতা দিতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই লড়াই আগামী দিনেও চলবে।