পুজোর সময় বিদেশ ভ্রমণ করতে চান? ঘুরে আসুন জর্জিয়া (Georgia)। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রাজধানী শহর তিবলিসিতে রয়েছে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ছাপ। এখানকার স্থানীয় খাবার বৈচিত্রপূর্ণ। তিবলিসি ছাড়াও ঘুরে আসা যায় উপকূলবর্তী শহর বাটুমি থেকে। ট্রেক করতে চাইলে রয়েছে ককেশাস। সাম্প্রতিক কালে কয়েক বছরে ভ্রমণপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পর্বতসঙ্কুল দেশটি। প্রাচীন এবং আধুনিকের মেলবন্ধন দেখা যায়। দেশটি ছোট্ট। তবে এর বিশালত্ব মুগ্ধ করে। ককেশাসের স্বর্গীয় দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা। এছাড়াও রয়েছে সমুদ্র সৈকতের অতুলনীয় দৃশ্য৷
সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বেড়াতে গেলে মন ভাল হয়ে যাবে। এখানকার শীতের মরশুম দীর্ঘ এবং প্রবল। নভেম্বর থেকে মার্চ এড়িয়ে চলাই ভাল। এই সময় বেশিরভাগ ভ্রমণের পরিকাঠামোই বন্ধ থাকে এবং উচ্চ ককেশাস অঞ্চল দুর্গম হয়ে ওঠে। শীতের মরশুমে মোটামুটি ভাবে ফাঁকাই থাকে। কারণ পর্যটকেরা সেভাবে আনাগোনা করেন না। হোটেলের দরও থাকে বেশ কম।
জর্জিয়া (Georgia) ঘোরার জন্য পর্যটকেদের অনেকটাই দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। কম করে একটা সপ্তাহ সময় নিয়ে যেতে হবে। হাতে সময় রাখতেই হবে তিবলিসি শহরকে জানার জন্য। এছাড়া দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াতে এবং পাহাড়ি এলাকায় ঘোরার জন্যও কয়েকটা দিন হাতে রাখা উচিত।
আরও পড়ুন-ভাষাসন্ত্রাস : মুখ্যমন্ত্রী আজ বক্তব্য রাখবেন বিধানসভায়
একবার জর্জিয়া (Georgia) পৌঁছে গেলে আর কোনও অসুবিধা নেই। বেসরকারি মিনিবাসে চেপে ঘোরা যাবে। যদিও তা বিশেষ রুটে চলাচল করে। একটি গাড়ি ভাড়া করেও সেই গাড়ি চালিয়ে ঘুরে বেড়ানো যেতে পারে। যদিও এই উপায়টির জন্য খরচ একটু বেশিই পড়ে। তবে স্বাধীনতা থাকে। বেশিরভাগ পর্যটক একটাই মাত্র ট্রেন পরিষেবার উপর নির্ভর করে থাকেন। তিবলিসি থেকে বাতুমি পৌঁছনোর তুলনামূলক দ্রুত উপায় এটাই। তবে পাহাড়ি অঞ্চলে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে ইন্টারনাল ফ্লাইটের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। এতে সময় অনেকটাই বাঁচবে।
তিবলিসি ভ্রমণের জন্য আদর্শ হল টু-লাইন মেট্রো সিস্টেম। এর পাশাপাশি ট্যাক্সি পরিষেবা অত্যন্ত সাশ্রয়ী। মেট্রোয় চেপে যেখানে যাতায়াত করা যায় না, সেখানে ট্যাক্সিই ভরসা। তিবলিসিতে রয়েছে প্রচুর গির্জা। আসলে এটি একটি পুরনো শহর। কেবল-কারের মাধ্যমে সোলোলাকি রিজ থেকে শহরের ব্যাপক ভিউ পাওয়া যায়। দেশের রাজধানী থেকে কেউ ডে-ট্রিপে যেতে চাইলে বেরিয়ে পড়তে পারেন শহরতলির উদ্দেশ্যে। এটাই হতে পারে জীবনের সবথেকে স্মরণীয় রোড ট্রিপ। একবার সেখানে পৌঁছলে বরফাবৃত শৃঙ্গ মাউন্ট কাজবেকের সঙ্গে পাহাড়ি গির্জার দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ডের নিরিখে দেখতে গেলে জর্জিয়া ভ্রমণ বেশ সস্তার হতে পারে। তবে এশিয়ার বেশির ভাগ দেশে ভ্রমণের তুলনায় কিন্তু জর্জিয়া ভ্রমণ বেশ খরচবহুল। যেহেতু পর্যটন ইন্ডাস্ট্রি উন্নত হচ্ছে, আর স্ট্যান্ডার্ডেরও ক্রমাগত বিকাশ হচ্ছে, তাই এখানে খরচও বেশ বাড়ছে।
১০০টিরও বেশি দেশের মানুষ জর্জিয়ায় ভিসা-ফ্রি ভ্রমণ করতে পারবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইজরায়েল, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং স্যুইৎজারল্যান্ড এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর যেসব দেশের নাগরিকদের ভিসার প্রয়োজন, তাঁদের এর জন্য খরচ পড়বে ২০ মার্কিন ডলার। ভারতীয়রা এই তালিকাতেই পড়ে। তবে জর্জিয়ার ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ পেতে হলে ভ্যালিড শেনজেন, ইউএস অথবা ইউকে ভিসা থাকা প্রয়োজন৷ জর্জিয়ার ই-ভিসা পোর্টালের মাধ্যমে ভিসার আবেদন জানানো যায়। সব ডকুমেন্ট ঠিকঠাক থাকলে ৫ দিনের মধ্যেই চলে আসবে ই-ভিসা। হাতছানি দেয় জর্জিয়া? সপরিবার ঘুরে আসুন। মনের মধ্যে অদ্ভুত আনন্দের জন্ম হবে।