প্রতিবেদন : রাজ্য বিধানসভার ইতিহাসে আজকের দিনটি ঘটনার অভিঘাত ও তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিশ্চিতভাবে সামনের সারিতে থাকবে। গত ৫০ বছরে বাংলার কোনও মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার ওয়েলে নেমে গন্ডগোল থামাছেন, দলের বিধায়কদের শান্ত হতে বলছেন। ওয়েলে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকছেন যাতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত না হয়। কিন্তু তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব কিছুতেই সকলের থেকে আলাদা।
আরও পড়ুন-তৃণমূলকে মোকাবিলায় ব্যর্থ তাই সেনাকে অপব্যবহার বিজেপির
এদিন বিধানসভায় দীর্ঘক্ষণ স্লোগান শুটিং চালানোর পর বিজেপি বিধায়করা কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি এবং কটূক্তি করতে থাকেন। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল বিধায়করা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। শুরু হয় প্রবল বাদানুবাদ, পাল্টা স্লোগান। পরিস্থিতি সামলাতে ওয়েলে নেমে পড়েন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আসেন ইন্দ্রনীল সেন, দেবাশিস কুমার, নির্মল ঘোষরা। বিজেপি পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে নিয়ে যায় যে, হুমায়ুন কবীর, উদয়ন গুহরা নিজেদের শান্ত রাখতে পারছেন না। ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ-সহ বাকিদের সঙ্গে তখন প্রায় হাতাহাতি অবস্থা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এবার ময়দানে নামলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাঃ শশী পাঁজা, অসীমা পাত্র, লাভলি মৈত্র-সহ দলের বিধায়কদের শান্ত করার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওয়েলে নেমে সকলকে উত্তেজিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। অসীম ধৈর্য দেখান মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের নির্দেশ দেন নিজেদের আসনে বসার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ভূমিকা দেখে বিস্মিত বর্ষীয়ান বিধায়করাও। তাঁরা মনে করতে পারছেন না বিরোধী আসনে যখন তাঁরা ছিলেন, তখন কোনও মুখ্যমন্ত্রী এভাবে ওয়েলে নেমে পরিস্থিতি শান্ত করছেন। তাঁদের আগেও যাঁরা বিধানসভায় সদস্য ছিলেন, তাঁরাও মনে করতে পারছেন না এমন ধরনের ঘটনা। সেদিক থেকে বৃহস্পতিবারের বিধানসভা কার্যত ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইল।