হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে রোগীর মৃত্যুর পর পরিবার বিল পরিশোধ করতে না পারলেও কোনওভাবেই মৃতদেহ আটকে রাখা যাবে না। রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের (Health Commission) তরফে জারি হওয়া নতুন নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে, রোগীর মৃত্যুর সর্বোচ্চ পাঁচ ঘন্টার মধ্যে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে। এই নির্দেশ না মানলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল থেকে শুরু করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমিশনের (Health Commission) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে বিল মেটানো হয়নি বা মেডিক্লেমের টাকা হাতে আসেনি— এমন নানা অজুহাতে বেসরকারি হাসপাতাল মৃতদেহ আটকে রেখেছে। এতে মৃতদেহ পচে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, এবং চরম হেনস্থার শিকার হচ্ছেন পরিবার-পরিজন। এই প্রবণতা আর সহ্য করা হবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন- সংবিধান রক্ষার লড়াইয়ে বাংলার মানুষ রয়েছেন সঙ্গে : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
তবে ব্যতিক্রম হিসেবে বলা হয়েছে, যদি মৃতের পরিবার লিখিতভাবে অনুরোধ জানায় যে দেহ কিছু সময় মর্গে রাখা হোক, সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড় দিতে পারবে। কিন্তু হাসপাতালের নিজস্ব কারণে বা শর্তে দেহ আটকে রাখা একেবারেই চলবে না। কমিশন জানিয়েছে, দেহ হস্তান্তরে কোনও কারণে দেরি হলে তা উপযুক্ত পদ্ধতিতে জানাতে হবে পরিবারকে। সেই সঙ্গে দেহে যাতে পচন না ধরে, তার দায়ও নিতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বহু মানুষ। স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক আধিকারিকের মতে, এই নির্দেশ কার্যকর হলে রোগীর পরিবারের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি করে টাকা আদায়ের প্রবণতা কমবে। একইসঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালের অমানবিক আচরণ ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার উপরও লাগাম টানবে এই কড়া নির্দেশিকা।