আটকে পড়া ভারতীয়দের ফেরাতে নেপালে পাঠানো হচ্ছে বিশেষ বিমান

এ-ব্যাপারে নেপালের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কথাবার্তা চালানো হচ্ছে কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে।

Must read

কাঠমান্ডু: নেপালে আটকে থাকা ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফেরানোর জন্য বিশেষ বিমান পাঠাচ্ছে দিল্লি। এ-ব্যাপারে নেপালের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কথাবার্তা চালানো হচ্ছে কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে। ভারতীয় বায়ুসেনার দুটি বিমান বৃহস্পতিবারই নয়াদিল্লি থেকে উড়তে পারে নেপালের উদ্দেশ্যে। এখনও পর্যন্ত খবর, অন্তত ৪০০ ভারতীয় আটকে রয়েছে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে। কারণ, নেপালের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ এই বিমানবন্দর। বিমান ওঠানামা সম্পূর্ণ বন্ধ। বাতিল করা হয়েছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী অনেক বিমান। বিমানবন্দরের দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। কিন্তু সমস্যাটা শুধু বিমানবন্দরে নয়, নেপালের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয়। সংখ্যাটা সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও তাঁদের একটা বড় অংশই পর্যটক। ব্যবসা এবং অন্য কাজে গিয়েও সেখানে আটকে পড়েছেন অনেকে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে তাঁদের মধ্যে। কাতর আর্তি, আমাদের বাঁচান। আর দেরি না করে এখনই দেশে ফেরার ব্যবস্থা করুন। ভারতীয় ভলিবল খেলোয়াড় উপাসনা গিল খেলতে গিয়ে আটকে পড়েছেন নেপালে। তিনি ভারতীয় দূতাবাসের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, দ্রুত যেন উদ্ধার করা হয় আটকে থাকা ভারতীয়দের। শুধু নেপালের ভেতরেই নয়, সীমান্তের ওপারে চিনেও আটকে পড়েছেন বেশ কিছু ভারতীয়। কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা সেরে তিব্বত দিয়ে ফেরার পথেই তাঁরা আটকে পড়েছেন নেপাল-চিন সীমান্তে। অন্তত দু’হাজার পুণ্যার্থী চিনের তিব্বত প্রদেশের ছোট্ট গ্রাম ড্রাচেনে আটকে রয়েছেন মঙ্গলবার থেকে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতীয়। কারণ, অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নেপাল সীমান্ত। বিকল্প পথও জানা নেই আটকে পড়া ভারতীয়দের।

আরও পড়ুন-সংখ্যাতত্ত্বের প্রতারণা নয়, জবাব দিক বিজেপি

নেপালে আটকে পড়া ভারতীয়দের আশ্বস্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সারা রাত উত্তরকন্যায় পাহারা দিয়েছি। আশা করি শান্তি ফিরে আসবে। মনিটরিং করব। পর্যটক যাঁরা গিয়েছেন, এটুকু বলব, আমরাও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেখছি। ১-২ দিন অপেক্ষা করুন। আস্তে আস্তে আপনাদের ফিরিয়ে আনব। চিন্তা করবেন না। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোনও বিপদের মধ্যে পড়বেন না। ওরা শান্তি ফেরাক, আমরা প্রতিবেশী দেশে শান্তি ফিরে এলে খুশি হব। প্রধানমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, নেপালের হিংসা হৃদয়বিদারক। এত তরুণ প্রাণ হারিয়েছেন, আমি মর্মাহত। নেপালে শান্তি, স্থিতিশীলতা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নেপালের ভাই-বোনেদের অনুরোধ, শান্তিকে সমর্থন করুন। এদিকে নেপালের জেল ভেঙে পালানো কয়েদিরা ভারতে পালিয়ে আসতে চাইছে বলে খবর। তারা যাতে এদেশে ঢুকতে না পারে তার জন্য কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ এবং পুলিশ। ইতিমধ্যেই নেপালের জেল থেকে পালিয়ে ভারতে ঢুকতে চেষ্টা করে ধরা পড়েছে ৫ জন। গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ওই কয়েদিদের। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকেও ইতিমধ্যে জারি করা হয়েছে দু’টি বিজ্ঞপ্তি। বলা হয়েছে, নেপালের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে ভারতীয় নাগরিকদের আপাতত নেপালে যেতে নিষেধ করল বিদেশমন্ত্রক। নেপালে এই মুহূর্তে যেসব ভারতীয়রা রয়েছেন তাঁদেরও আপাতত ঘরের বাইরে বের হতে বারণ করা হয়েছে। এ-ব্যাপারে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে। সেখানকার ভারতীয়দের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। স্থানীয় প্রশাসনের গাইডলাইন মেনে চলুন। দেওয়া হয়েছে দুটি হেল্পলাইন নম্বরও। উল্লেখ্য, বহু ভারতীয় পর্যটক এই মুহূর্তে আটকে পড়েছেন নেপালে।

Latest article