নেপালে (Nepal) জেন জি-এর বিক্ষোভকারীরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, এবং এর ফলে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যেই ফিরে এল পুরোনো স্মৃতি। চলতি বছরের মার্চ মাসে, এক স্কুলছাত্রের বক্তৃতা দেশজুড়ে যে যুব বিদ্রোহের আগুন ধরিয়ে দেবে এই কথা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারে নি। হলি বেল ইংলিশ সেকেন্ডারি স্কুলের ১৬ বছর বয়সী ছাত্র আবিষ্কার রাউত স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে “জয় নেপাল” স্লোগানের জন্য প্রথম ভাইরাল হয়ে ওঠে। তার বক্তৃতা দেওয়ার ধরণ দেখে নেটদুনিয়ায় তাঁর ‘হিটলার’ তকমাও জুটে যায়। এই বক্তৃতার ঠিক ছয় মাস পরে, “জয় নেপাল” নেপালের যুব-নেতৃত্বাধীন বৃহত্তম বিক্ষোভের স্লোগান হয়ে উঠল। আবিষ্কার রাউত জাতির রাজনৈতিক মাটি কাঁপানো জেন জির আন্দোলনের মুখ হিসেবে প্রতিফলিত হলেন।
আরও পড়ুন-ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী
গত মার্চ মাসে স্কুলের ২৪তম বার্ষিক অনুষ্ঠানে রাউতের বক্তৃতা নেপালি পড়ুয়াদের মন ছুঁয়ে যায়। দুর্নীতি, বেকারত্ব এবং রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি এমন কিছু কথা বলেন যা যতটা আবেগপ্রবণ ততটাই প্রতিবাদী ছিল। সেদিন অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে আবিষ্কার বলেন যুব সমাজ হল সেই আগুন যা অন্ধকারকে পুড়িয়ে ফেলবে। সেই ঝড় যা অন্যায়কে দূর করে সমৃদ্ধি আনবে। নেপাল তাদের নিজেদের এবং এর ভবিষ্যৎ তরুণদের হাতে। জয় যুগ! জয় নেপাল।
আরও পড়ুন-বাংলার একজনও বৈধ ভোটারদের গায়ে হাত পড়লে দিল্লি ঘেরাও, ডোরিনার মঞ্চ থেকে হুঙ্কার কুণাল ঘোষের
এদিন তাঁর জ্বালামুখী বক্তৃতা, যা অনেকটাই “হিটলার-কোডেড” ডেলিভারি স্টাইল নিমেষের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ওঠে। জেন জি’র কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাঁদের মনে হয়েছে এটি ছিল নতুন আহ্বান, দেশের যুবসমাজকে বেঁধে রাখা আত্মতুষ্টির বিরুদ্ধে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যেই আবিষ্কার রাউত একজন স্কুলছাত্র থেকে কাঠমান্ডুর একজন প্রতিবাদী নেতায় রূপান্তরিত হয়েছেন। ভাইরাল ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি এই গণ-বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে, হাতে রয়েছে মাইক্রোফোন, কয়েক হাজার তরুণকে সরকারের জবাবদিহিতার দাবিতে স্লোগান দেওয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন-জঙ্গি দমন অভিযানে গ্রেফতার পাঁচ সন্দেহভাজন আইএসআইএস জঙ্গি
রাউত সম্প্রতি জনতার উদ্দেশে বলেন, “জাতীয়তাবাদীরা দেশে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। আমাদের মতো তরুণদের জীবন বাঁচাতে কেবল আপনারাই পারেন। সময় এসেছে। আমাদের বিপ্লব আনতে হবে। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে।” শুধুমাত্র তাঁর কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে হাজার হাজার ছাত্র ও যুবসমাজ রাস্তায় নেমে এসেছে। তাঁর একটি মাত্র ভাষণ একটি প্রজন্মের আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। “জয় নেপাল” স্লোগানটি একটি স্কুল সমাবেশের স্লোগান থেকে একটি জাতীয় আন্দোলনের যুদ্ধের স্লোগানে রূপান্তরিত হয়েছে, যার নেতৃত্বে একজন কিশোর। তাঁর কথাগুলি একটি পুরো প্রজন্মকে উৎসাহিত করেছে। সম্প্রতি মনীষা কৈরালাও এটিকে নেপালের জন্য একটি কালো দিন বলে অভিহিত করেছেন এবং বিক্ষোভকারীদের উপর সহিংসতার নিন্দা করেছেন। তিনিও আশা করছেন পরিস্থিতির উন্নতি হবে।