অপরাজিতা জোয়ারদার. রায়গঞ্জ: উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্ত্তী প্রান্তিক গ্রাম রাধিকাপুর। দেশভাগের স্মৃতি বুকে নিয়ে এখানেই হয়ে আসছে প্রায় পাঁচশো বছর প্রাচীন উদগ্রামের দুর্গাপুজো। একটা সময় পুজোর আগে অবিভক্ত বাংলার মানুষরা একসাথে পুজোয় আনন্দে মেতে উঠতেন। পুজোর চারদিন দূরদূরান্ত থেকে আত্মীয়স্বজনরা ভিড় করত উদগ্রামে। যদিও এখন কাঁটাতার ভাগ করেছে বাংলাকে। চাইলেই ছুটে মণ্ডপে আসতে পারবে না ওই বাংলার মানুষ। প্রায় পাঁচশো বছর আগে অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার জমিদার জগদীশচন্দ্র রায় বাহাদুর এই গ্রামে পুজোর প্রচলন শুরু করেছিলেন।
আরও পড়ুন-আমার দুর্গারা
জমিদার বাড়িতে দেবী আবাহনের সময় কামান দাগা হত। সেই শব্দ শোনার পরই মাতৃ আবাহনের সূচনা হত উদগ্রামে। তখন পুজোর জৌলুসই ছিল আলাদা। হাজার হাজার গ্রামবাসী এই পুজোর আনন্দে মেতে উঠতেন। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দুই ভাগে বিভক্ত সোনার বাংলায় পুজোর জৌলুস হারাল। আজও প্রতিবছর এই পুজোর আয়োজন করেন গ্রামবাসীরা৷ জন্মাষ্টমীর দিন পুরনো প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। সেই কাঠামোতেই নতুন করে মাটির প্রলেপ দিয়ে মৃন্ময়ী মা-এর পুজো হয়৷ পুজোর চারদিন মুখোশ নাচ ও চণ্ডীগান আয়োজিত হয়। বসে মেলাও। গ্রামের লোকেদের বিশ্বাস, গ্রামের মেয়েদের এই মন্দিরে বিয়ে দিলে সংসার জীবন সুখের হয়। মন্দিরের নামে বেশকিছু জমি রয়েছে গ্রামে। জমিতে ফসল উৎপাদন করে তা বিক্রি করে পুজোর খরচ করা হয়। পুজোয় কোনও চাঁদা তোলা হয় না। দূর-দুরান্তের বহু মানুষ আজও পুজোর সময় এই গ্রামে আসেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসেন ওপার বাংলার মানুষও।