প্রতিবেদন : চোখধাঁধানো সব পটচিত্র। সুর-তাল-লয়ে গানে গানে তার উপস্থাপনা। মন ছুঁয়ে যাওয়া বাংলার সেইসব হস্তশিল্পের বিষয়ভাবনায় পরতে পরতে চমক। সাম্প্রতিককালের নাড়া দিয়ে যাওয়া ঘটনাকেই তুলে ধরা হয়েছে এই পটচিত্রে। মাছের বিয়ে, রামায়ণ, বৃক্ষরোপণ, চণ্ডীমঙ্গলের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ থেকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা, সুনামিও— কী নেই সেই তালিকায়। আর সবথেকে নজর কেড়েছে যে বিষয়টি তা হল— দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ড! বাসে নির্ভয়ার উপর হামলা। চিকিৎসা করাতে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া এবং তাঁর মৃত্যু পটচিত্র ও গানে গানে তুলে ধরা হয়েছে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ‘পুজোর মেলা’য়।
বিএনসিসিআইয়ের উদ্যোগে অভিনব এই ‘পুজোর মেলা’য় জবা চিত্রকরের স্টলে তুলে ধরা হয়েছে নির্ভয়া কাণ্ড। আঁকা পটের ছবির কাহিনি সুর ও লয়ের উপস্থাপন করছেন শিল্পী। আর তা দেখতেই ভিড় জমেছে স্টলে। পটচিত্রের সাথে সম্পর্কিত লোকগান পটুয়া সঙ্গীত বা পটের গান বলেই খ্যাত।
আরও পড়ুন-২৬৮ বছরে পড়ল কর্মকার বাড়ির পুজো
আজ রবিবার এই মেলার শেষ দিন। বাংলার ১৬টি জেলার শিল্পীদের স্টল বসেছে এখানে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার পটচিত্রে গ্রাম থেকে শিল্পী জবা চিত্রকরের নির্ভয়াকাণ্ড। গান লিখেছেন তাঁর স্বামী মন্টু চিত্রকর। জবাদেবীর কথায়, এর আগেও সাম্প্রতিক নানা ঘটনার ওপর পটচিত্র বানিয়েছি। নির্ভয়াকাণ্ড তেমনই একটা। একটি মেয়ের উপর অত্যাচারের অবর্ণনীয় কাহিনি তুলে ধরেছেন তিনি। পটচিত্রের বিভিন্ন অংশ নির্দেশ করে ছবিগুলোর বর্ণনা দিয়ে গান গাইছিলেন জবা— ‘শোনো শোনো সর্বজন, শোনো দিয়া মন… মেয়েদের ওপর অত্যাচার চলছে এখনও… এই অপমান সইতে পারছি না।’ পটচিত্রের দিকে তাকালে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। চিত্রপটে পাতায় পাতায় তুলে ধরা হয়েছে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের নৃশংস ঘটনাকে। এভাবেই ছবি ও গানে প্রতিবাদ ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী জবা চিত্রকর। তুলির টানে তুলে ধরেছেন নারী শক্তিকে। জবা আরও বলেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়েদের এগিয়ে দিয়েছেন। আমাদের মতো শিল্পীদের কথা ভেবেছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আমরা বিভিন্ন মেলায় নিজেদের শিল্পপ্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। বাড়ির কাজ শেষ করে যখন পটচিত্র আঁকতে বসেন তখন এসব কথায় তাঁকে ভাবায়।