প্রমাণিত বেহাল বিজেপি-রাজ্য

নবম-দশমের পর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগের পরীক্ষার দিনও দেখা গেল বিজেপিশাসিত রাজ্য থেকে বাংলাতে নিয়োগের পরীক্ষা দিতে আসছেন শিক্ষিত বেকাররা

Must read

প্রতিবেদন : নবম-দশমের পর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগের পরীক্ষার দিনও দেখা গেল বিজেপিশাসিত রাজ্য থেকে বাংলাতে নিয়োগের পরীক্ষা দিতে আসছেন শিক্ষিত বেকাররা। এর থেকেই প্রমাণিত সে-রাজ্যে যেমন বেকারদের চাকরি দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেই তেমনই চাকরির পরীক্ষাও শিকেয়। একইসঙ্গে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট যে, বিজেপিশাসিত রাজ্যে গিয়ে বাঙালিদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে আর এই রাজ্যে সেই ছবি একেবারে উল্টো। বরং পরীক্ষার্থীদের সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এর থেকে প্রমাণিত হচ্ছে বাঙলার সংস্কৃতি কোনও দিন পুশ-ব্যাকে বিশ্বাস করে না। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এদিন একেবারে ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন ৩১,৩৬২ জন। ১৪ সেপ্টেম্বর ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থী ১৩,৫১৭ জন। এদের মধ্যে বড় অংশ এসেছেন উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের চাকরিপ্রার্থী। সেই ডবল ইঞ্জিন সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতার খতিয়ান আসলে কত, এই তথ্য থেকে তার আন্দাজ পাওয়া যাবে। শিক্ষামন্ত্রী এদিন ফের একবার মানবিকতার নিদর্শন দিয়ে বলেন, বাংলার সংস্কৃতি কোনও দিন ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থীদের রাজ্যে পরীক্ষায় বাধা হয়নি বা হবে না।

আরও পড়ুন-অসমের গুয়াহাটিতে ৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্প, উত্তরবঙ্গেও অনুভূত কম্পন

তিনি স্পষ্ট জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্ম, জাত-পাত, সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে এমনকী আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বিভাজন করেননি। তাঁর রাজনৈতিক দলের লোকেরাও কোনওদিন তাঁদের দিকে লাঠি নিয়ে তেড়ে যাননি। আর বাংলা বললে বাংলাদেশি বলে পুশব্যাক সিস্টেম করে দেওয়ার কাজও করেনি। তুমি অধম হইলে আমি উত্তম হইব না কেন। ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের যে সিদ্ধান্ত নেহরু করেছিলেন তখন বাংলা নিয়ে কোনও বিতর্ক ছিল না। সেই বিতর্ক ছিল মহারাষ্ট্রে, দক্ষিণ ভারতে। বিজেপিশাসিত রাজ্য থেকে যাঁরা পরীক্ষা দিতে আসছেন তাঁরা শিক্ষিত বেকার। আমরা তাঁদের অপমান করব না। আমরা চেষ্টা করব সম্পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা যাতে নিতে পারেন। কম্পিটিশন হিন্দি ও ইংরেজি মিডিয়ামে হতে পারে। সরকারের কোনও পুশব্যাক সিস্টেম নেই।
বাংলার সরকার বারবার চাকরির দরজা খোলার চেষ্টা করলেও আদালত পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে নিয়োগ-প্রক্রিয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে রাজ্যে দু-দফায় এসএসসি-র লিখিত পরীক্ষা রবিবার শেষ হল। এরপরেও বিরোধী দলনেতা হুমকি দিয়ে চলেছেন মামলা করে এই পরীক্ষা প্রক্রিয়াকেও স্তব্ধ করে দেওয়ার। সেখানেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্ন, বিরোধী দলের কোনও কোনও দায়িত্ববান সদস্যের মামলা করার অধিকার রয়েছে। তাঁরা মামলা করতে পারেন। পরীক্ষা অত্যন্ত নির্ভুল হয়েছে। যাঁরা মামলা করবেন মনে রাখবেন যাঁরা পরীক্ষা দিলেন তাঁরা আমার আপনার রাজ্যেরই ছেলে-মেয়ে।
সেই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, কিছু অডিও ঘুরছে— এসব বিরোধীরা বলেছিলেন। একটাও প্রমাণ নেই। প্রমাণহীন কিছু কথা হাওয়ায় ভাসিয়ে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের কতটা উপকার হচ্ছে সন্দেহ রয়েছে।

Latest article