জন্মদিনে সূর্যোদয় পাকিস্তানকে উড়িয়ে

পাকিস্তান ১২৭/৯ (২০ ওভার) ভারত ১৩১/৩ (১৫.৫ ওভার)

Must read

দুবাই, ১৪ সেপ্টেম্বর : একটা বিজ্ঞাপন খুব হিট হয়েছিল একসময়। দিন যায়, বছর যায়। জেনারেশন বদলে যায়। শুধু পাকিস্তানের (india vs pakistan) কপাল বদলায় না!
দুবাইয়ের এই ম্যাচ আর একটা এপিসোড। এবার হার ৭ উইকেটে। এক-আধটা ঝটকা সুর্যদের ইনিংসে লাগেনি, তা নয়। এই যেমন দুই ওভারে দুই উইকেট চলে গেল। কিন্তু ওই যে বলে, জোর কা ঝটকা ধিরে সে লাগি। ঝটকা এল তিলক (৩১) ও ব্যর্থ ডে বয় সূর্যর (৪৭ নট আউট) ব্যাট থেকে। ওরা যে মার-মার করলেন এমন নয়। মারলেন, ধরলেন। কিন্তু পাক বোলিংয়ে সেই বৈচিত্র্য নেই যা ভারতের আছে। তাই চাপ কেটেও গেল। মুঠো আলগা হল। আর মোরাম বিছানো মসৃণ রাস্তা দিয়ে এশিয়া কাপে দ্বিতীয় জয় তুলে নিল ভারত।
সূর্যরা কেন এত সহজে জিতলেন তার অনেক কারণ। যেমন এই দলের কাছে ১২০ বলে ১২৭ কিছুই না। তা সে শুভমনের (১০) উইকেট যতই দ্বিতীয় ওভারে চলে যাক। অভিষেক প্রথম বল থেকে ঝোড়ো ব্যাটিং করলেন। শাহিনকে মারা ছক্কা এত ভাল কানেক্ট হল যে নিমেষে মিড উইকেটের বাইরে। কিন্তু সব বলে বাউন্ডারি হয় না কে বোঝাবে! শুভমনের পর এটাও আইয়ুবের শিকার। স্টেপ আউট করতে গিয়ে ফেরত গেলেন ৩১ করে।
পাকিস্তান ৬০টা ডট বল খেলেছে। ভারতের ইনিংস এটা হয়নি। আসলে সূর্যর এই ছেলেরা এত বেশি টি-২০ ম্যাচ খেলেন যে বাউন্ডারির ঝড়েও সিঙ্গলস ভোলেন না। ৩.৪ ওভারে ৪১/২ হয়ে যাওয়ার পরও তাই পাওয়ার প্লে-র শেষে রেকর্ড রান হয়েছে। সূর্যর পাক ম্যাচে বিশেষ রান নেই। কিন্তু এদিন সেই রানটাই পেয়ে গেলেন ৩৭ বলের ইনিংসে। শিবম দুবে নট আউট ১০ রানে। মঙ্গলবার পরের ম্যাচ ওমানের বিরুদ্ধে।

বয়কট-বয়কট গন্ধের মধ্যে দুটো জিনিস দেখার ছিল। মাঠ ভরে কি না আর পাক অধিনায়কের সঙ্গে সূর্যর করমর্দন হয় কি না। প্রথমটার উত্তর না। মাঠ পুরো ভরেনি। আর আঘার সঙ্গে সূর্য হাত মেলাননি টসে বা খেলার শেষে। শুধু টসে বলে গেলেন আমরা বল করতেই চেয়েছিলাম। সেটা হল বলে খুশি। যে ম্যাচটা আগে খেলেছি তাতে ভাল উইকেট ছিল। রাতের দিকে উইকেট আরও ভাল হয়েছিল। তবে আর্দ্রতা আছে বলে শিশির সমস্যা করতে পারে এখানে।

আরও পড়ুন-আজব! যোগীরাজ্যে অনলাইন ভিডিয়ো দেখে নিজেই লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচার যুবকের

হার্দিক আর বুমরা প্রথম দুই ওভারে দুটো উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে (india vs pakistan) খুব চাপে ফেলে দেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র শেষে পাকিস্তানের রান দাঁড়ায় ৪২/২। অর্থাৎ ফকর জামান (১৭) আর সাহিবজাদা ফারহান (৪০) ততক্ষণে ঘর সামলে নিয়েছেন। ফকর এই পাকিস্তান দলের এক নম্বর ব্যাটার। এদিন শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তায় ছিলেন। তার আগে ফারহান গোটা দুয়েক ছক্কা হাঁকিয়ে ফেলেছেন। সেটাও বুমরার বলে।
কিন্তু দুবাইয়ের কী হল? ভারত-পাক ম্যাচ মানে টিকিটের হাহাকার। স্টেডিয়ামের আশপাশে দিনভর জনস্রোত। কিছুই যে রবিবার হল না। ২৫ হাজারি স্টেডিয়াম হয়তো আধা ভর্তি হল, কিন্তু উচ্ছ্বাস কোথায়? ক্রিকেট কর্তাদের চেনা ভিড়টাও পুরোপুরি অনুপস্থিত। বিসিসিআই কর্তারা যে যার খুব জরুরি কাজ দেখিয়ে এই ম্যাচে গরহাজির থাকলেন। নাকি সোশ্যাল মিডিয়ার দাবি মতো নিজেদের মতো করে বয়কটে শামিল হলেন! কে জানে।

গৌতম গম্ভীর ছেলেদের বলে দিয়েছিলেন, ম্যাচ ছাড়া কিছুতে মন দিও না। এমনকী প্রি ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে প্রথা মেনে সূর্যকে পাঠানো হয়নি। এলেন রায়ান টেন দুশখাতে। এটা টিম ম্যানেজমেন্টের সেফ খেলা। সহকারী কোচকে আর এইসব টেনশন নিয়ে কে প্রশ্ন করবে! তার উপর ১০ ওভারে ৪৯/৪ হয় যাওয়ার পর এমনিতেই টেনশন গলা শুকিয়েছিল পাক সমর্থকদের।

দুটো দলই আগের ম্যাচের একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছিল। অশ্বিনের মতো প্রাক্তন যতই অর্শদীপের জন্য গলা ফাটান, গম্ভীর নিজের কমফোর্ট জোন থেকে নড়েননি। অর্থাৎ সেই শিবম দুবে। কিন্তু সূর্যদের এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। লোয়ার অর্ডারে ব্যাটার বাড়াতে গিয়ে জেনুইন বোলারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না তো! এই জমানায় ব্যাপারটা এমন যে একটু বল করলেই হবে, ব্যাটটা ভাই ভাল করতে হবে। ভারতীয়দের মধ্যে টি-২০ ক্রিকেটে বেশি উইকেট নেওয়া অর্শদীপকে তাই বেচারাই বলতে হচ্ছে।

তিন স্পিনারে গিয়ে ভারত আগেই চাপে ফেলে দিয়েছিল সলমন আঘার দলকে। এখানে রাত বাড়লে উইকেট আরও স্লো হবে। বল ঘুরবে। সূর্যর হাতে কুলদীপ, বরুণ ও অক্ষরের মতো স্পিনার থাকায় এগিয়ে ছিল ভারত। আর সেটাই হল। প্রথম দুই ওভারে হার্দিক আর বুমরা দুটো উইকেট তুলে নেওয়ার পর বাকিটা সেরে দিলেন স্পিনাররাই। আগের ম্যাচে চার উইকেট নেওয়ার পর এই ম্যাচে ১৮ রানে ৩ উইকেট কুলদীপের। দুই উইকেট নেন অক্ষর। তবে শাহিন আফ্রিদি ১৬ বলে ৩৩ নট আউট না থাকলে পাকিস্তান ১২৭/৯ করতে পারত না।

Latest article