কমে যাচ্ছে গঙ্গোত্রী (Gangotri) হিমবাহর দৈর্ঘ্য। ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘতম এবং গুরুত্বপূর্ণ নদী গঙ্গা (Ganga) নিয়ে উদ্বিগ্ন ভূতত্ত্ববিদ এবং হাইড্রোলজিস্টরা। বছরে গড়ে ৩০০ মিটার করে কমে যাচ্ছে গঙ্গা নদীর উৎস। অর্থাৎ গত ১০ বছরে গঙ্গার উৎস হিসেবে পরিচিত এই হিমবাহর দৈর্ঘ্য কমেছে কমপক্ষে তিন কিলোমিটার। গঙ্গোত্রী হিমবাহটি উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় অবস্থিত। প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য জুড়ে বিস্তৃত। এই হিমবাহ ভাগীরথী নদীর উৎস, যা পরবর্তীতে দেবপ্রয়াগে অলকানন্দা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে গঙ্গার জন্ম হয়।
আরও পড়ুন-ইঞ্জিনিয়ার দিবস উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা
ভূতত্ত্ববিদ এবং হাইড্রোলজিস্টদের মতে, গঙ্গোত্রী হিমবাহর দৈর্ঘ্য কমে যাওয়ার সঙ্গে গঙ্গার স্বাস্থ্যের সম্পর্ক রয়েছে। গঙ্গা নদী যদি অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে, তবে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ সমভূমি এবং গঙ্গার জলে পুষ্ট দেশের জনবসতির ৭০ শতাংশের ভবিষ্যৎ নিয়েই টানাটানি পড়বে। বিশেষজ্ঞদের চিন্তা বাড়াচ্ছে গঙ্গোত্রী গ্লেসিয়াল সিস্টেম।
হিমালয়ের দক্ষিণ ঢালে আবহাওয়া ও ভূপ্রকৃতির বিন্যাসেও বড় পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের তৈরি হাই রেজোলিউশন স্পেশাল প্রসেস ইন হাইড্রোলজি মডেল এই বিষয় নিশ্চিত করেছে। আইআইটি ইন্দোরের গ্লেসিও–হাইড্রো ক্লাইম্যাটিক ল্যাবের গবেষকরা ৪০ বছরের তথ্য সংগ্রহ করে তৈরি করেছেন মডেলটি। এই হিমবাহটি গঙ্গোত্রী জাতীয় উদ্যানের ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রকেও সাহায্য করে, যা উচ্চ-সংরক্ষিত অঞ্চল। এটি স্নো লেপার্ড, হিমালয়ের নীল ভেড়া (ভারাল) এবং উত্তরাখণ্ডের পাখি হিমালয়া মোনাল-সহ বিরল প্রজাতির আশ্রয়স্থল।
আরও পড়ুন-জন্মদিনে সূর্যোদয় পাকিস্তানকে উড়িয়ে
পরিবেশবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জুন থেকে সেপ্টেম্বর, এর মধ্যে দেশে ৮০ শতাংশ বৃষ্টি হয়। কিন্তু গঙ্গোত্রী এবং অন্য হিমবাহগুলো এত বেশি পরিমাণে গলে যাচ্ছে যে, তার কোনও আগাম হিসেব সম্ভব নয়। সেই কারণে যথেষ্ট চিন্তায় বিজ্ঞানীরা। হিমবাহের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সরকার National Action Plan on Climate Change এবং National Mission for Sustaining the Himalayan Ecosystem -এর মতো কর্মসূচি শুরু করেছে। তারপরেও এখনও কোনও উন্নতি নেই ক্রমশ কমেই চলেছে গঙ্গোত্রী হিমবাহের দৈর্ঘ্য।