নয়া আবগারি নীতির প্রস্তাব বয়সসীমা ২৫ থেকে কমিয়ে ২১, রাজস্বের লোভে তরুণদের মদ্যপানে উৎসাহ দিচ্ছে দিল্লির বিজেপি সরকার

রাজস্বের লোভে উল্টো সুর বিজেপির! ক্ষমতায় এসে দিল্লিতে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো ছিনিমিনি খেলছে তারা।

Must read

নয়াদিল্লি: রাজস্বের লোভে উল্টো সুর বিজেপির! ক্ষমতায় এসে দিল্লিতে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো ছিনিমিনি খেলছে তারা। রাজধানীর গেরুয়া সরকারের প্রস্তাবিত নয়া আবগারি নীতিতে দিল্লির সব পানশালায় মদ্যপানের ন্যূনতম বয়স ২৫ থেকে কমিয়ে ২১ করার কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবকে কার্যকর করার পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে তারা। অথচ দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ সরকারের নতুন আবগারী নীতির বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়েছিল এই বিজেপি। কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ফায়দা লুটেছিল নির্বাচনে। জেলেও যেতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে এবং মণীশ সিসোদিয়া-সহ আপ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে। আর ক্ষমতায় আসার মাস সাতেকের মধ্যেই সেই রাজস্ববৃদ্ধির অজুহাতেই দিল্লির বিজেপি সরকারের নতুন আবগারী নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ। অদ্ভুত যুক্তি, বয়সসীমা ২৫ হওয়ায় অর্থাৎ ২৫ বছরের কমবয়সিদের এখন দিল্লির সব পানশালায় মদ্যপান নিষিদ্ধ হওয়ায় দিল্লি সরকারের রাজস্বের নাকি ক্ষতি হচ্ছে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা। তাই রাজস্বের স্বার্থেই নয়া উদ্যোগ। স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে বিজেপি সরকারের দ্বিচারিতা নিয়ে।

আরও পড়ুন-অনলাইন বেটিং অ্যাপ কী? অঙ্কুশের পর তালিকায় আরও

প্রশ্ন উঠেছে, রাজস্ব চাই, নাকি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা চাই? বিজেপি পরিচালিত দিল্লি সরকার যে পথ ধরেছে, তাতে উত্তর স্পষ্ট। গেরুয়া সরকারের চোখে রাজস্বই সবার আগে। এতদিন পর্যন্ত রাজধানীতে মদ্যপানের বয়সসীমা ছিল ২৫ বছর। হঠাৎ তা নামিয়ে আনা হল ২১-এ। বিজেপি সরকারের দাবি, এতে কালোবাজারি বন্ধ হবে, বাড়বে রাজস্ব। অর্থাৎ রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে যদি তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে জলাঞ্জলি দিতে হয়, তাতেও আপত্তি নেই বিজেপির।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই নীতি আসলে তরুণদের হাতে মদের বোতল তুলে দিয়ে বিপথে ঠেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অভিভাভকরা। তাঁদের অভিযোগ, ২১ বছরের ছেলেমেয়েরা এখনও কলেজ পড়ুয়া। এই বয়সে হাতে মদের লাইসেন্স তুলে দেওয়া মানে তাদের জীবন ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া। বিরোধীদের অভিযোগ, একদিকে দিল্লি সরকার মদ বিক্রিতে ছাড় দিচ্ছে, অন্যদিকে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর দুর্ঘটনা। এত প্রাণহানি, এত ক্ষতি সরকারের চোখে পড়ছে না? রাজস্বের লোভেই শুধু এই নীতি।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানে গাফিলতি ঢাকতে রাজস্ববৃদ্ধির নামে বিজেপি সরকার কি এখন মদ বিক্রির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে?

Latest article