৫০০ বছরের প্রাচীন পুজো সাবিত্রী মন্দিরে

প্রতিদিন যজ্ঞ, হোম, চণ্ডীপাঠ হয়। ঝাড়গ্রাম ছাড়াও মেদিনীপুর, পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকেও বহু মানুষ রাজবাড়ির পুজো দেখতে আসেন।

Must read

দেবব্রত বাগ, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামের সাবিত্রী মন্দির ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো। এই মন্দির ঘিরে একাধিক লোককথা আছে। আর পাঁচটা পুজোর থেকে এখানকার দুর্গাপুজো অনেকটাই আলাদা। এখানে শাক্ত মতে পুজো হয়। বলিরও প্রচলন আছে। এই মন্দির নিয়ে প্রচলিত লোককথা এরকম, আজ থেকে প্রায় চারশো বছর আগে ঘন জঙ্গল ছিল এই এলাকা। রাজস্থান থেকে শিকারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে রাজা মান সিং জঙ্গলে এসে হঠাৎই এক অপূর্ব সন্দরীকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রূপে মুগ্ধ রাজা সাত পাঁচ না ভেবেই তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

আরও পড়ুন-কুড়মি আন্দোলনে প্রভাবহীন জনজীবন

রাজার কথা শুনে দেবী শর্ত দেন, রাজা সামনে পথ দেখিয়ে তাঁকে নিয়ে যাবেন। পেছনে তিনি যাবেন। তবে কোনও অবস্থাতেই পেছন ঘুরে তাকানো যাবে না। তাহলেই তিনি অদৃশ্য হয়ে যাবেন। শর্ত মেনে রাজা তাঁর রাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বেশ কিছুটা গিয়ে রাজার মনে হয়, ওই রমণী তাঁকে ঠকায়নি তো? পিছনে তো কোনও আওয়াজ নেই। হঠাৎই পিছনে তাকিয়ে ফেলেন রাজা মান সিং। সঙ্গে সঙ্গে এক অদ্ভুত ঘটনা তাঁর চোখে পড়ে। সুন্দরী রমণী ধীরে ধীরে মাটির নিচে ঢুকে যাচ্ছেন। রাজা ছুটে এসে তাঁর মাথার চুল ধরে টেনে তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। হাতের মুঠোয় এক গাছা চুল থেকে যায়। সেদিন রাতেই রাজাকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে মা সাবিত্রী ওই স্থানে মন্দির গড়ে তাঁর পুজোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে মা সাবিত্রীর মাথার চুল পুজা করা হয় এখানে। তাই শুধু মায়ের মুখটুকুই দেখা যায়। নিত্যপুজো হয়। মা সাবিত্রীরই এক রূপ যেহেতু দেবী দুর্গা তাই দুর্গাপুজোর দিনগুলি খুব ধুমধাম করে পুজো হয়। তবে সেটাও বৈচিত্র্যপূর্ণ। জেলায় সম্ভবত এই মন্দিরেই একমাত্র মূর্তিপুজোর বদলে পটে পুজো হয়। তাই অনেকেই একে পটেশ্বরীর পুজো বলেন। পুজোর ১৫ দিন আগে জিতাষ্টমীতে শুরু হয় পুজো। প্রতিদিন যজ্ঞ, হোম, চণ্ডীপাঠ হয়। ঝাড়গ্রাম ছাড়াও মেদিনীপুর, পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকেও বহু মানুষ রাজবাড়ির পুজো দেখতে আসেন।

Latest article