শিবির-সংখ্যা : ৫১৯
৬.৫ লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করেন
জেলার মোট ১,৯৮০ বুথের জন্য নির্ধারিত হয়েছে ৭৫৭টি শিবির। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে ৫১৯টি শিবির, অর্থাৎ প্রায় ৬৯ শতাংশ। শুধু সংখ্যায় নয়, মানুষের অংশগ্রহণেও রেকর্ড গড়েছে জলপাইগুড়ি। এখন পর্যন্ত ৬,৫১,৮৬৪ জন মানুষ সরাসরি উপস্থিত থেকেছেন এই শিবিরে। গড়ে প্রতিটি শিবিরে হাজির হচ্ছেন ১,২০০-রও বেশি মানুষ, যা স্পষ্ট করে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের আস্থা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ। শিবিরগুলিতে কেবল অভিযোগ বা দাবি শোনা নয়, বরং সঙ্গে সঙ্গে সমাধানের পথও বের হয়েছে। প্রতিটি শিবিরে গড়ে ৫টি করে কাজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ফলে এখনও পর্যন্ত ২,৫৯৫টি কাজ চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, পথবাতি, অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের সংস্কার, রাস্তা নির্বাণ, পানীয় জলের সংযোগ, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়ন। প্রশাসন প্রতিটি সিদ্ধান্ত ডিজিটাল রেকর্ডে সংরক্ষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাচ্ছে। ফলে কাজের অগ্রগতি মনিটরিং সহজ হচ্ছে এবং মানুষ পাচ্ছেন দ্রুত পরিষেবা। ইতিমধ্যেই ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করে অগ্রগতির শীর্ষে রয়েছে জেলা। শুধু তাই নয়, প্রতিটি শিবিরে মানুষের উপস্থিতি এবং কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সংখ্যাও রাজ্যের গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। এই উদ্যোগে আরও উৎসাহ যোগাচ্ছেন একাধিক মন্ত্রী। খাদ্য সরবরাহ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বেশ কয়েকটি শিবিরে উপস্থিত ছিলেন। কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না প্রায় গোটা জেলা চষে বেড়িয়ে মানুষের সমস্যার কথা শুনেছেন। মাল বিধানসভার বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বুলু চিক বড়াইকও অংশ নেন একাধিক শিবিরে। শিবিরগুলিতে সবচেয়ে বেশি দাবি উঠেছে সোলার এলইডি লাইট বসানো ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সংস্কার সংক্রান্ত।
আরও পড়ুন-
সমাধান
দশ কোটি টাকারও বেশি কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। ২৫ তারিখের মধ্যেই প্রথম কিস্তির সম্পূর্ণ টাকা পাওয়া যাবে। জেলায় অনুষ্ঠিত হওয়া বিভিন্ন শিবিরগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য গয়েরকাটার চা-বাগান সংলগ্ন শিবিরে বহু মানুষ দীর্ঘদিনের দাবির কথা তুলে ধরেন জমির পাট্টা প্রদান। শিবির থেকে সেই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি বন বিভাগের অন্তর্গত মরাঘাট রেঞ্জ এলাকার গোসাইয়েরহাট, মেলা বস্তি ও খুকলুং বনবস্তির রাভা জনজাতির মানুষের জন্যও আয়োজন করা হয় শিবির। বন্য জন্তুর ভয় উপেক্ষা করেই সরকারি আধিকারিকরা এই দুর্গম এলাকায় পৌঁছন। সেখানে মানুষের সবচেয়ে বড় দাবি ছিল সন্ধ্যার পর প্রতিটি রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা। দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধূপগুড়ি মহাকুমার ঝাড় আলতা ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতে অনুষ্ঠিত শিবিরে বিপুলসংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করেন সামাজিক সুরক্ষা যোজনার আওতায়। জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেন, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ শিবিরে মানুষের ঢল প্রমাণ করছে তাঁরা সরকারের প্রতি কতখানি আস্থা রাখছেন। কয়েক হাজার কাজ ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে। এগুলি সম্পূর্ণ হলে জেলার সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উন্নয়নের সুফল পাবেন। জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান তথা রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে এই কর্মসূচি।