দেবনীল সাহা
দেশজুড়ে যখন অশুভ শক্তির হাতে আক্রান্ত বাংলা ভাষা ও বাঙালির গরিমা, ঠিক সেইসময় যুগ-যুগান্তরের বাঙালি মনীষীদের স্মরণ করছে দক্ষিণ কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুজো ৯৫ পল্লি অ্যাসোসিয়েশন দুর্গোৎসব কমিটি। রামকৃষ্ণ থেকে রবীন্দ্রনাথ, যুগে যুগে বাংলার মাটিতে জন্ম নিয়ে যে মহান ব্যক্তিত্বরা গোটা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেছেন; নিজেদের মণ্ডপে সেই সোনার বঙ্গসন্তানদের তুলে ধরেছে যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লি। ৭৬তম বর্ষে শিল্পী শক্তি শর্মার তত্ত্বাবধানে তাঁদের এবারের পুজো-ভাবনা (Durga Puja) মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতার লাইন ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে…’।
আরও পড়ুন-ওদের ই স্কয়ার থাকলে আমাদের সঙ্গে আছে এম কিউব : অভিষেক
পুজো (Durga Puja) কমিটির তরফে সভাপতি বিজয় দত্তের কথায়, বাংলার মনীষীরা যুগে যুগে সারা ভারতবর্ষকে পথ দেখিয়েছেন, বিশ্ব দরবারের দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। তাই এবারের শারদোৎসবে তাঁদের সেই অবদানকে তথ্য-সহ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মণ্ডপ সাজিয়ে তুলতে বাঙালি মনীষীদের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। মণ্ডপ নির্মাণে প্রচুর পরিমাণে রট আয়রনের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টার অফ প্যারিস, কাঠ ও কাগজের কারুকার্য। এছাড়াও মণ্ডপসজ্জার জন্য দিঘা থেকে প্রায় কয়েক হাজার শঙ্খ আনা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে সিন্দুকও ব্যবহার করা হয়েছে। আলোকসজ্জায় রয়েছে বাড়তি আকর্ষণ। প্রতিমাতেও রয়েছে ৯৫ পল্লি সুলভ আভিজাত্য। দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া-যোধপুর পার্ক এলাকায় আরও এক ঐতিহ্যবাহী পুজো বাবুবাগান সর্বজনীন। এবার গোটা বাংলার লোকসংস্কৃতি উঠে এসেছে বাবুবাগানের মণ্ডপে। এক আস্ত রাজপ্রাসাদের আদলে তৈরি হয়েছে প্যান্ডেল। বাবুবাগানের এই মণ্ডপে পুজোর আনন্দে শামিল হয়েছেন বাংলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা লোকশিল্পীরাও। শিল্পী প্রদীপ রুদ্র পালের প্রতিমার সঙ্গে বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণ সেন বরাটের আবহ সঙ্গীতে নজর কাড়ছে বাবুবাগানের পুজো। অন্যদিকে, ৭৪তম বর্ষে যোধপুর পার্ক সর্বজনীনের এবছরের ভাবনা ‘আদি অনন্ত হর হর গঙ্গে…’। বিশাল মণ্ডপের ছাদে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে দেবাদিদেব মহাদেবের বিরাট আবক্ষমূর্তি, যার জটা থেকে নির্গত হচ্ছেন মা গঙ্গা। আবার, সেলিমপুর পল্লি পুজো কমিটির এবছরের থিম ‘প্রহরী’।