প্রতিবেদন : কলকাতায় ৩৯ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে। তারপরও জল জমা নিয়ে জঘন্য রাজনীতির পথে হেঁটেছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের কুৎসার জবাবে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন আদতে কলকাতা শহরের নিকাশি ব্যবস্থা আগের থেকে কতটা উন্নত। তিনি বলেন, যেভাবে লাগাতার টালিনালার ড্রেজিং হয় তার জন্যই কলকাতা শহরের জল এত দ্রুত নেমে যায়। এই ধরনের মেঘভাঙা বৃষ্টি আগে কখনও হয়নি। এর কোনও পূর্বাভাসও ছিল না। তা সত্ত্বেও আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রী। আদতে ফরাক্কায় ড্রেজিং না হওয়ায় যে গঙ্গার নিম্ন অববাহিকা জলে টইটম্বুর, তার উল্লেখ করে কেন্দ্রের অপদার্থতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
কলকাতার উত্তরের অংশে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হয়েছে সেখানে বিকাল ৪টের মধ্যে জল নেমে গিয়েছে। মৌলালি, গিরিশ পার্ক এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক হয়েছে। এমনকী যে গড়িয়া এলাকায় সোমবার রাতে সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল সেখানেও জল নেমেছে। আর তার জন্য রাজ্য সরকারের তৎপরতাকেই সাধুবাদ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আজ যতটা জল বেরোচ্ছে তার থেকে কম বেরোত যদি না ড্রেজিং করা হত।
আরও পড়ুন-দুর্যোগ মোকাবিলায় নেতা-নেত্রী ও কর্মীরা নেমে পড়লেন রাস্তায়
গঙ্গাতেই এত জল যে, শহরের খালগুলি দিয়ে যে জল গঙ্গায় ফেলা হচ্ছে, তা ফিরে আসছে খালেই, একথা জানিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কীভাবে সেই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তা ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগের আঙুল তোলেন কেন্দ্রের দিকেই। তিনি দাবি করেন, ডিভিসি-র একতরফা জল ছাড়ায় রাজ্য এমনিতেই প্লাবিত ছিল, নদী, খাল সব টইটম্বুর ছিল। ফরাক্কা ব্যারেজ দিয়ে আসছে বিহার, উত্তরপ্রদেশের প্রচুর জল। উত্তরপ্রদেশ, বিহারে বিপুল বৃষ্টিতে গঙ্গা এমনিতেই ভরে ছিল। সেখানে ড্রেজিং না হওয়ায় সমস্যা তো ছিলই। কেন কেন্দ্র সরকার ফরাক্কায় ড্রেজিং করে না? তার ওপরে এল এই হঠাৎ বিপুল বৃষ্টি। বাংলায় বর্ষা সামলানোর ক্ষমতা বাংলার আছে। কিন্তু বাইরের দায়িত্বও বাংলাকে নিতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও যে পরিস্থিতি সামলানো গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে, তার জন্য লাগাতার ড্রেজিং হওয়াকেই সাধুবাদ দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থায় কোনও সমস্যা নেই। কলকাতার ড্রেজিং ব্যবস্থা একদম ঠিক আছে। আমরা টালিনালা থেকে সমস্ত ড্রেজিং করে দিয়েছি। বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্প পেয়েছি। তার মধ্যে রাজ্য সরকারেরও টাকা রয়েছে। সেই টাকায় ডিপিআর তৈরি করতে দিয়েছি। দুবছরের মধ্যে আরও কাজ হবে। শুধুমাত্র শহর কলকাতা নয়, হাওড়া ও পার্শ্ববর্তী জেলা শহরগুলির নিকাশির জন্যই উদ্যোগী রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী জানান, হাওড়াতে এর আগে ড্রেজিং হয়নি। ডিপিআর তৈরি করা হচ্ছে হাওড়ারও। এছাড়াও নিম্ন দামোদর অববাহিকায় ৩ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পের কাজ করেছি। প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ পুকুর কেটেছি। যাতে জল ধরে রাখতে পারে। ৫০০ চেক ড্যাম তৈরি করেছি।