সুদেষ্ণা ঘোষাল, নয়াদিল্লি: দিল্লির সবথেকে পুরনো প্রবাসী বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল চিত্তরঞ্জন পার্ক। এই সম্ভ্রান্ত এলাকার প্রাচীন কালীবাড়ির আকর্ষণও দীর্ঘদিনের। চিত্তরঞ্জন পার্কের ১ নম্বর মার্কেট থেকে হাঁটাপথ এই কালীমন্দির (Chittaranjan Park Kali Mandir)। অনেকে বলেন শিবমন্দির। সারাবছর পর্যটকর ভিড় লেগেই আছে। দিল্লি এবং এনসিআর জনবসতি বাড়ার সঙ্গে লাফিয়ে বেড়েছে দুর্গাপূজার সংখ্যাও। কিন্তু এরইমাঝে চিত্তরঞ্জন পার্ক কালীবাড়ির দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা আজও একটা দৃষ্টান্ত। সারা বছর ধরে দিল্লির মানুষ প্রতীক্ষায় থাকেন এখানকার প্রতিমা দর্শনের। এখানকার কালীমন্দিরের পাশে ছোট জমিতেই বছরের পর বছর মা দুর্গার আরাধনার আয়োজন করা হয়। মন্দিরের সদস্য মহিলা, পুরুষ একয়োগে পূজোর আয়োজন করেন। শিল্পীরা কাঠামো গড়া থেকে শুরু করে মাটির সম্পুর্ণ প্রতিমা গড়া পর্যন্ত এই কালীমন্দিরেই(Chittaranjan Park Kali Mandir) থাকেন। এটাই এখানকার রীতি। কালীমন্দিরের পাশে ফুলের সুসজ্জিত বাগান তার ডানদিকে ছোট মাঠে মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী মায়ের আবাহন। ডাকের সাজের প্রতিমা বেদিতে বসানো হয়। ষষ্ঠীতে শঙ্খধ্বনি বাজিয়ে মাকে স্বাগত জানান মহিলারা। মা দুর্গাকে সোনার টিপ ও টায়রা পড়িয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। পুজোর চার দিন প্রসাদ, রকমারি ভোগের আয়োজন থাকে। অষ্টমীর সকাল থেকে কয়েকশো মানুষ অঞ্জলি দিতে আসেন কালীমন্দির পূজা মণ্ডপে। এই মন্দিরে প্রসাদ বুকিং নিতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পুজোর প্রত্যেক দিন ৫ হাজার মানুষ ভোগ খায়। সাধারণ মানুষকে আলাদা করে ভোগ বিতরণ করা হয়। এবছর থেকে কালীমন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ন্যায়পাল নিয়ুক্ত করা হয়েছে। বারিন গাঙ্গুলিকে এই নতুন ন্যায়পালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, কামাক্ষা মন্দিরের মতো এই চিত্তরঞ্জন পার্ক কালীবাড়ির ন্যায়পালের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। বাঙালি অধ্যুষিত এই অভিজাত অঞ্চলে পূজোর চারদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। ভিড় সামাল দিতে রাস্তায় নামেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বাংলার মুখোরোচক খাবার, এগরোল, ফিশফ্রাই, রকমারি চপ, ঝালমুড়ি, ভেলপুরির স্বাদ উপভোগের পালা ঠাকুর দেখার ফাঁকে। আনন্দে মেতে ওঠে কচিকাঁচা থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ। এই মণ্ডপের বাইরে সুন্দর বসার জায়গার ব্যাবস্থা করা রয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতা থেকে আসেন স্বনামধন্য শিল্পীরা।