ওয়ার্লির শৈলী, প্রাচীন গুহাচিত্রের ঝলক খিদিরপুর ২৫ পল্লিতে

সেই গুহাচিত্রই এবার নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে খিদিরপুরের ২৫ পল্লির পুজো মণ্ডপে। সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হয়েছে প্রতিমাও।

Must read

অনুরাধা রায়: কয়েক হাজার বছর আগের গুহাচিত্র। সেই প্রাচীন আদিবাসী চিত্রকলার ঝলক দেখা যায় ভারতের মহারাষ্ট্রের উত্তর সহ্যাদ্রির পাহাড়ি অঞ্চলের বিশেষ করে থানে জলোর দাহানু, তালাসারি, জওহর, ওয়ার্দা, মোকাদা, বিক্রমগড় এবং পালঘর এলাকায়। ‘ওয়ার্লি’ নামটার অর্থ ‘জমি বা মাঠ’। সেই গুহাচিত্রই এবার নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে খিদিরপুরের ২৫ পল্লির পুজো মণ্ডপে। সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হয়েছে প্রতিমাও।

আরও পড়ুন-নিঃসন্তান বিধবার সম্পত্তির উত্তরাধিকার শ্বশুরবাড়িরই

মণ্ডপের শিল্পকলার মধ্য দিয়ে ওয়ার্লি চিত্রকলার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। যেখানে বোঝানো হয়েছে, লোকজ চিত্র প্রথার সঙ্গে ওয়ার্লি চিত্রমালার বিশাল পার্থক্য। ওয়ার্লি চিত্রকে চিত্রকথা বললে ভুল হবে না, এই ছবির মাধ্যমে তারা তাদের প্রবহমান জীবনধারাকে তুলে ধরে, পরের প্রজন্মের জন্য শিক্ষা, বংশ পরম্পরায় প্রচলিত কাহিনীগুলো তাদেরকে জানানোর তাগিদে ছবি আঁকা। তাদের রেখা নির্ভর ছবিতে কোন ব্যক্তি বিশেষ নেই, কিন্তু ঘটনা আছে। আবার দৈনন্দিন জীবনকে প্রকাশ করা হয় চিরায়ত কাহিনির মতো করে, যেমন মাঠে কৃষি কাজ হচ্ছে, বা তারা প্রকৃতির সাথে বসবাস করে, তাকে নষ্ট করে না, এরকম অর্নিদিষ্ট বিষয়। ইউরোপের ঐতিহ্যবাহী চিত্রকলায় যেমন একটি ঘটনার নাটকীয় পরিবেশনা থাকত, ওয়ার্লি চিত্রে শিল্পী নানা ধরনের কম্পোজিশন করেন, নানা বিষয় একত্রও করেন কিন্তু তাকে একক ঘটনার বর্ণনা হিসাবে দেখা যায় না। ওয়ার্লি ভাষার কোনও লিখিত রূপ না থাকায় ছবি এখানে কথা বলে। চিত্রকথার মধ্যে গল্প বলাটা এখানে বুঝতে হবে। এখানে কৃষক আছে কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট কৃষক নয়, গরু আছে সে কোনও নির্দিষ্ট গরু নয়, তারা গল্পের চরিত্র, কালের পরিক্রমায় চলে আসা জীবনের সাধারণ ছবি। এমন একটি থিমের ভাবনা এল কীভাবে? পুজো কমিটির প্রচার সম্পাদক কালী সাহা বললেন, পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। ওদের বোঝাতে হবে আমরা একসঙ্গে থাকি, আমরা প্রকৃতিকে ভালবাসি। সেই জন্যেই ২৫-এর উৎসবের মূল মন্ত্র ওয়ার্লির শৈলী। যে থিমই বলে দেয় একসঙ্গে থাকার মূল মন্ত্র।

Latest article