কুলদীপ-তিলকে রুদ্ধশ্বাস জয়, এল কাপও

পাকিস্তান ১৪৬ (১৯.১ ওভার) ভারত ১৫০/৫ (১৯.৪ ওভার)

Must read

দুবাই, ২৮ সেপ্টেম্বর : ভরা মাঠে জেতার মজাই আলাদা। এটা আবার সূর্যকুমার যাদবের অঙ্কে ১৫-০। অতঃপর বলে দেওয়ার দরকার নেই পাকিস্তান আবার হেরেছে। রুদ্ধশ্বাস চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার পর হারের হ্যাটট্রিক। এই হার ৫ উইকেটে। আর সেটা তিলকের হাতে। চাপের মুখে এই ইনিংস তিনি না খেললে এশিয়া কাপ আসত না। রিঙ্কু অবশ্য প্রথম বলেই চার মেরে কাপ নিয়ে এলেন। তিলক নট আউট থেকে যান ৬৯ রানে।
১০ রানে দুই উইকেট চলে যাওয়ার পর অবধারিতভাবে আত্মতুষ্টির কথা উঠেছিল। সামনে ১৪৬ দেখেই কি আত্মতুষ্টি গ্রাস করেছিল? লাগাতার রান করে অভিষেক এখন শর্মাজিকা বেটা। ফাহিমের প্রথম ওভারে এত ক্যাজুয়াল! স্লো ডেলিভারি দেখেও শট সামলে নেননি। ফিরে গেলেন ৬ করে। তারপর সূর্য (১)। পা না বাড়িয়ে ইনসাইড আউট খেলে উইকেট দিয়ে গেলেন আফ্রিদিকে। অবস্থা আরও করুণ শুভমনের (১২) আউটে। দুটো বাউন্ডারি হয়ে গিয়েছিল। দরকার ছিল না রউফকে ক্যাচ প্র্যাকটিস দেওয়ার।
তবে এই চাপ কাটিয়ে ওঠা গেল তিলকের জন্য। বাঁহাতি মুম্বইকর এক মহীরুহর ছায়ায় বড় হয়েছেন। রোহিত শর্মা। রবিবাসরীয় রাতে তিলক আইডলের স্টাইলে দলকে টেনে নিয়ে গেলেন। বেশিরভাগ ভারতীয় ব্যাটার যখন স্কোয়ার অফ দ্য উইকেট খেলেন, তিলক অন সাইডে রোহিতের মতো শর্ট আর্ম পুল বেশি খেললেন। সঞ্জুর সঙ্গে জুটিতে ৫৭ রান উঠে গিয়েছিল। তখনই সঞ্জু (২৪) আব্রারের স্লো বলে উইকেট দিয়ে যান। শিবম ৩৩ রান করলেন। ম্যাচ তখনই এসে যায় ভারতের হাতে।
পাকিস্তান ১৩তম ওভারে ১১৩/১ তুলে ফেলার পর মনে হচ্ছিল দুশো হতে পারে। কিন্তু ওদের মিডল বা লোয়ার অর্ডার নেই। কোয়ালিটি স্পিনের সামনে অসহায়। ওয়াকার বললেন, এই ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা নেই। শাস্ত্রীর কথায়, এটা হারাকিরি। কেন বললেন? এইজন্য যে পাকিস্তান অতঃপর ৩৩ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে শেষমেশ ১৯.১ ওভারে ১৪৬। কুলদীপ প্রথম দুই ওভারে মার খেলেন। পরের দুই ওভারে ৪ উইকেট। পাকিস্তানের ৮ উইকেট গেল স্পিনারদের হাতে। বাকি দুটি বুমরার।
এরকম এশিয়া কাপ আগে হয়নি। এখন ভারত-পাক ম্যাচ মানেই পরতে পরতে নাটক। আগেরদিন সূর্য ফটোশুটে যাননি। এদিন ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন বেজার মুখে। যেহেতু ওপাশে সলমন আঘা। টসের সময় শাস্ত্রীর সঙ্গে মাঠে দেখা গেল ওয়াকারকে। শাস্ত্রী কথা বললেন সূর্যর সঙ্গে। আর পিসিবির অনুরোধে মাঠে নেমে পাক অধিনায়ক আঘার ইন্টারভিউ নিলেন তিনি। এমন দৃশ্য আগে কেউ দেখেনি।
সূর্য পাকিস্তানকে ব্যাট করতে দিয়েছিলেন। কিন্তু যে জন্য সেটা হয়নি। তারা পাওয়ার প্লে-তে ৪৫/০ করেছিল। তারপর সাহিবজাদা ফারহান (৫৭) আর ফখর জামান(৪৬) মিলে ছবিটা পাল্টে দেন। ৮৪ রানে ফারহান বরুণের বলে ফিরে যান। কিন্তু মাঝের ক’টা ওভার ঝড় উঠে গিয়েছিল। হার্দিক পেশিতে টান ধরায় ফাইনালে খেলেননি। তাঁর জায়গায় অর্শদীপকে না খেলিয়ে গম্ভীর আনলেন রিঙ্কুকে। এটাই কি তখন ব্যাকফায়ার করল? বুমরা প্রথম দুই ওভারে ১৮ রান দিয়ে উইকেট পাননি।

আরও পড়ুন-মধ্য হাওড়ায় যুব তৃণমূলের উদ্যোগে টোটোয় চেপে ঘুরে প্রতিমা দর্শন করলেন প্রবীণরা

অর্শদীপকে ফাইনালে খেলানোর দাবি তুলেছিলেন অশ্বিন-সহ অনেকেই। কিন্তু গম্ভীর কানে তোলেননি। হার্দিক নেই, বুমরা ছন্দে নেই। পাঞ্জাবের বাঁ হাতিকে দরকার ছিল। শিবম প্রথম স্পেলে ভাল বল করেছেন। কিন্তু তিনিও পরে পিটুনি খেলেন। আসলে হার্দিক না খেলায় চার রেগুলার বোলারের সঙ্গে পঞ্চম বোলার ছিলেন শিবম। পিটুনির পর তিলককেনিয়ে আসতে হল।
তবু যে ভারত পরে ম্যাচে ফিরল সেটা স্পিনারদের জন্য। বরুণ ফারহানকে তুলে নিয়েছিলেন। সাইম আয়ুবের (১৪) দুঃসময় জারি থাকল কুলদীপ জাদুতে। এরপর অক্ষর যখন হ্যারিসকে (০) তুলে নিলেন, পাকিস্তান চাপে ফেরত এল ১১৪/৩ করে। এরপর বাকিটা স্পিনের সামনে আত্মসমর্পণ। কুলদীপ ৩০ রানে ৪ উইকেট নিলেন। তিলকের সঙ্গে তিনিও ফাইনালের নায়ক।

Latest article