গুয়াহাটি: জুবিনকে কি আসলে বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে? অভিযোগের তীর ম্যানেজার সিদ্ধার্থর দিকেই। সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি ব্যান্ড সদস্যের। জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সমস্ত তথ্য উগরে দিলেন সিট আধিকারিকদের জেরার মুখে। পাশাপাশি জুবিনের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দেওয়া হল তাঁর স্ত্রী গরিমার হাতে। স্বামীর মৃত্যু নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শুক্রবারই মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজের বয়ান লিপিবদ্ধ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, জোর করে জলে নামানো হয়েছে জুবিনকে। প্রথমদিকে অন্য কথা বললেও ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মার ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন গরিমা।
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যে মন্দিরের পথে আক্রান্ত হলেন দলিত যুবক
লক্ষণীয়, ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে সিদ্ধার্থ-সহ মোট ৪ জনকে। গ্রেফতারের তালিকায় আছেন জুবিনের দলের সদস্য শেখরজ্যোতি গোস্বামী এবং সহগায়িকা অমৃতপ্রভা মহান্ত। তবে সিদ্ধার্থকে অযথা হেনস্থা করা হচ্ছে বলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁর দলেরই এক সদস্য। সিট তদন্তকারীদের জেরার সময় জুবিনের টিমের ড্রামার শেখরজ্যোতি গোস্বামী জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরে প্যান পেসিফিক হোটেলে জুবিনের সঙ্গে ছিল ওঁর ম্যানেজার সিদ্ধার্থ। তাঁর মৃত্যুর আগে সিদ্ধার্থ ভীষণ রহস্যজনক আচরণ করছিল। মৃত্যুর দিন সিদ্ধার্থ জোর করেই বোটের গতিবিধি নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। এমনকী বোটচালককেও সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে বাকি সমস্ত যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। আর কেউ যাতে এই বিষয়ে কথা না বলেন, সেই নির্দেশও দিয়েছিল অন্য আরেক জনকে। জলের মধ্যে জুবিনদার যখন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, তখন ওঁর ম্যানেজার চিৎকার করে বলেছিল- ওকে ছেড়ে দাও। তদন্তকারীদের কাছে শেখরজ্যোতি বলেন, জুবিনদা নিজে ভাল সাঁতারু ছিল। ও আমাকে আর সিদ্ধার্থকে সাঁতার কাটা শিখিয়েছে। ওঁর পক্ষে জলে ডুবে মরে যাওয়া অসম্ভব। অনুষ্ঠানের আয়োজক শ্যামকানু মোহন্তের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধার্থই জুবিনদাকে বিষ খাইয়েছে। এবং ইচ্ছে করেই সিঙ্গাপুরকে বেছে নিয়েছিল। এমনকী সিদ্ধার্থ কাউকে ওই বোটের ভিডিও শেয়ার করতেও বারণ করেছিল। সিঙ্গাপুরে হওয়া জুবিনের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দু’দিন আগেই ভারতীয় হাই কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছিল সিঙ্গাপুর পুলিশ। ২ অক্টোবর সেই রিপোর্ট পেয়েছিলেন গরিমা। জুবিনের মৃত্যুর তদন্তে গঠিত স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম-এর তরফে মরমী দাস, শনিবার, জুবিনের বাড়ি গিয়ে গরিমার শইকিয়া গর্গের হাতে রিপোর্টটি তুলে দেন। তবে সেই রিপোর্ট সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত গরিমার উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিনের মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহের দুবার ময়নাতদন্ত হয়েছে। এদিকে জুবিন গর্গের মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করল অসম সরকার। অনুমতি দিল গুয়াহাটি হাইকোর্ট। কমিশনের প্রধান হচ্ছেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমিত্র সাইকিয়া। জুবিনের মৃত্যু নিয়ে যে কোনও তথ্য কমিশনকে জানাতে পারবেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।