দুধিয়ায় ত্রাণশিবিরে আহতদের চিকিৎসা, ১৫ দিনের মধ্যে মিরিকে অস্থায়ী সেতু তৈরির নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

Must read

একে প্রবল বৃষ্টি, দোসর সিকিম-ভুটানের জলে দার্জিলিং ও ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধস। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মিরিকে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata banerjee)। পরিদর্শন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলি। ত্রাণশিবিরে কথা বলেছেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গেও।

মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata banerjee) সেখান থেকেই জানিয়েছেন, “মিরিকের দুধিয়ায় ১৫ দিনের মধ্যে তৈরি করে দেওয়া হবে একটি অস্থায়ী সেতু, যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়। পাশাপাশি স্থায়ী সেতু তৈরির কাজও চলবে, যা তৈরি করতে সময় লাগবে প্রায় এক বছর। ইতিমধ্যে দার্জিলিং-মিরিক সংযোগকারী ভেঙে পড়া দুধিয়া সেতু সংস্কারে পদক্ষেপ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া দুর্গতদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য সবদিক লক্ষ্য রাখতে হবে। কমিউনিটি কিচেন আপাতত একমাস চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন আর্থিক সাহায্যও।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে ২৩ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে- যার মধ্যে ১৮ জন মিরিক, কালিম্পং অঞ্চলের ও ৫ জন নাগরাকাটার। মৃতদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য এবং পরিবারের এক জনকে হোমগার্ডের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “টাকা জীবনের বিকল্প নয়। কিন্তু আমরা চাই, এই কঠিন সময়ে যেন কেউ মুখাপেক্ষী হয়ে না-থাকেন। তাই সরকারের তরফে এটুকু সহযোগিতা করা আমাদের সামাজিক কর্তব্য।”

আরও পড়ুন- বৃষ্টি-ধসে বিধ্বস্ত নেপাল, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৬০

ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া এক তরুণীর কাছে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শরীরের ক্ষত পরীক্ষা করে বলেন, “ওই তরুণী ধসের কবলে পড়েছিলেন। তাই তাঁর শরীরে আঘাত।” ক্যাম্পে যাতে ঠিকমতো চিকিৎসা পান আক্রান্ত তরুণী, তা নিয়ে বারবার জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিপর্যয়ে মাথার ছাদ হারিয়েছেন অনেক মানুষ। বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিও জলে চলে গিয়েছে। আধার, ভোটার, প্যান কার্ডের মতো সেসব জরুরি নথি দ্রুত তৈরি করে দিতে হবে, এই মর্মে জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সেইসঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি, ভাঙা ঘরবাড়ি সব রাজ্য সরকার বানিয়ে দেবে। পড়ুয়াদের বইখাতা- স্কুল ড্রেস নষ্ট হলে সেটাও দেখে নেওয়া হবে আশ্বাস তাঁর।

আজও উত্তরবঙ্গের এই বিপর্যয়ের জন্য ফের ভুটানের বৃষ্টিকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “ভুটান পাহাড়ের জলে বিপর্যয় হয়। শুনছি, নেপাল, ভুটান থেকেও কয়েকটা দেহ এখানে এসেছে। আমি মুখ্যসচিবকে বলেছি, এটা নিয়ে ওদের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেহগুলি পূর্ণ মর্যাদায় তাদের তুলে দিতে।”

গোটা উত্তরবঙ্গে বন্যা, বৃষ্টি ও ধসের কারণে যেখানে যত চাষিদের জমির ক্ষতি হয়েছে। তাঁদের কৃষি বিমার আওতায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। যাঁদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাঁদেরও পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। বৃষ্টি থামলেও নদীতে প্রবল স্রোত রয়েছে, সেটা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ এমন স্রোতে যদি শ্রমিকরা কাজ করতে না পারে, তাহলে ২ দিন অপেক্ষা করে যেন কাজ করা হয়। যাঁরা নির্মাণকর্মী তাঁদেরও সাবধানে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। সবাইকে লাইফ জ্যাকেট পরে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Latest article