দুষ্কৃতী নয়, বিজেপি পদাধিকারী! কারা ভাঙল ত্রিপুরায় তৃণমূল দফতর, তথ্য পেশ শশী-অরূপের

Must read

বিজেপি নিজের রাজ্যে লুম্পেনরাজকে নিজেরাই সার্টিফিকেট দিচ্ছে। দলীয় পদাধিকারী থেকে জনপ্রতিনিধিদের পাঠিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় তৃণমূল কংগ্রেসের সদর দফতর। কার্যত বিজেপি নিজের রাজ্যেই যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, তা প্রমাণিত মঙ্গলবারের ত্রিপুরার (TMC-Tripura) বনমালীপুরের হামলার ঘটনায়। ছবি দিয়ে সেই হামলাকারী বিজেপি নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের তথ্য পেশ করলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা ও তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দেওয়া হল, তৃণমূল যে গান্ধীগিরির পথে রয়েছে, তা থেকে নেতাজির পথে যেতেও সময় লাগবে না উস্কানি বন্ধ না হলে।

ত্রিপুরার (TMC-Tripura) বনমালীপুরে তৃণমূল সদর দফতরে মঙ্গলবার হামলা চালিয়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অবনতির ছবিটা স্পষ্ট করে দেয় ডবল ইঞ্জিনের প্রশাসন। হামলার নেপথ্যে কোন বিজেপি নেতারা, তা স্পষ্ট করতে গিয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা দাবি করেন, এটা সেই বনমালীপুর, যেখানে ওই রাজ্যের বড় ফ্লপ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নির্বাচন কেন্দ্র। যাকে এখন পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বাংলায় নির্বাচন তিনি দেখবেন। আদতে বিজেপি নিজেরা নিরাপত্তাহীনতায় ত্রিপুরায়। তাই তৃণমূল পার্টি অফিসে আক্রমণ।

সেখানেই ঘটনার সময়ে ত্রিপুরা পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরে মন্ত্রী শশী পাঁজা স্পষ্ট করে দেন, পুলিশ নীরব দর্শক। পুলিশ দাঁড়িয়ে সবটা দেখেছে। বাধা দেওয়া হয়নি রাজ্য সরকার পোষিত এই রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদে। কার্যত বিজেপি ডবল ইঞ্জিন রাজ্য়ে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়েই যে স্বৈরাচারের শাসন প্রতিষ্ঠা করছে, মঙ্গলবার বনমালীপুরের পুলিশ সেটাই প্রমাণ করল।

আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় ঢুকতে বাধা তৃণমূল প্রতিনিধিদলকে! বিমানবন্দরেই অবস্থান

বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রের মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বুধবার দাবি করেন কোনও রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় বিজেপি ভাঙচুর করে না। এদিন সেই বক্তব্যকে তথ্য দিয়ে মিথ্যে প্রমাণ করল তৃণমূল। বাস্তবে তৃণমূল সদর দফতরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা যে সার্টিফায়েড লুম্পেন রাজ, তা প্রমাণ করতে গিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী তুলে ধরেন বেশ কিছু ছবি। সেই ছবিতে স্পষ্ট দেখা যায়, বিজেপি রাজ্য যুবমোর্চা সভাপতি ভিকি প্রসাদ, বিশালগড় বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক তথা বিজেপি রাজ্য যুবমোর্চা সভাপতি সুশান্ত দেব ও আগরতলা সদর বিজেপি সভাপতি অসীম ভট্টাচার্যকে। আগরতলার তৃণমূল সদর দফতর ভাঙচুরের যে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, তাতে স্পষ্টভাবেই এই বিজেপি নেতারা যে উপস্থিত ছিলেন, তা প্রমাণিত হয় এই ঘটনায়।

তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী স্পষ্ট দাবি করেন, এটা বিজেপির সার্টিফায়েড লুম্পেন রাজ। কারণ আমরা আমাদের সংশাপত্র নিজেরা সেলফ অ্য়াটেস্টেট করি। বিজেপি নিজেদের লুম্পেনরাজকে নিজেরাই অ্যাটাস্টেট করেছে। কে কে করেছেন? প্রথম নাম ভিকি প্রসাদ। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দায়িত্ব নিয়ে ভাঙচুর করছেন। দ্বিতীয়, একজন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত বিধায়ক আইনসভার সদস্য হন। আইনসভার সদস্যের কাজ আইন প্রণয়ন করা। আইনসভার সদস্য যখন আইন হাতে তুলে আইন ভাঙেন তখন তাঁকে বলা হয় লুম্পেন। তিনি বিশালগড় বিধানসভার বিধায়ক সুশান্ত দেব। নিজে উপস্থিত থেকে নিজে ভাঙচুর করাচ্ছেন। তৃতীয়, অসীম ভট্টাচার্য। সদর জেলা সভাপতি। ইনিও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভাঙচুরে মদত দিচ্ছেন।

তবে যেভাবে তৃণমূলের উপর হামলা চালিয়ে তাঁদের প্ররোচিত করার রাজনীতি চালানো হচ্ছে, তাতে বেশিদিন গান্ধীবাদের পথে যে থাকবে না বাংলার শাসকদল, তাও এদিন স্পষ্ট করে দিলেন অরূপ চক্রবর্তী। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, বাংলাতেও বিজেপির দলীয় কার্যালয় রয়েছে। বাংলায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী তার প্রতিবাদ করেন। সেখানে তৃণমূল এখনও গান্ধীবাদের পথেই রয়েছে। কিন্তু গান্ধীর অহিংস নীতি থেকে সরে এসেছে নেতাজির পথ ধরতেও সময় লাগবে না।

Latest article