নয়াদিল্লি: ভারতের বৃহত্তম সংস্থা টাটা গ্রুপ-এর (Tata Group) হোল্ডিং কোম্পানি টাটা সন্সে অভ্যন্তরীণ সংঘাত তীব্র হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতে এবার আসরে নামল কেন্দ্র। টাটা ট্রাস্টের শীর্ষ নেতৃত্বকে কঠোর বার্তা দিয়েছে মোদি সরকার। টাটা ট্রাস্টের মধ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং দেশের প্রথম সারির এই শিল্পগোষ্ঠীর কাজে যেন বিভেদ যেন না ছড়ায়, সেই বিষয়ে সরকার জোর দিয়েছে। রতন টাটার মৃত্যুর পর টাটা সংস্থার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাড়ায় উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরাও।
আরও পড়ুন-ব্রিটেনের ন’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হবে ভারতে: স্টার্মার
জানা গিয়েছে, টাটা (Tata Group) ট্রাস্টের চারজন ট্রাস্টি চেয়ারম্যান নোয়েল টাটা-র কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ‘সুপার বোর্ড’-এর মতো কাজ করছেন, যা এই উত্তেজনার প্রধান কারণ। সম্প্রতি টাটার শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁরা টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নোয়েল টাটা, ভাইস-চেয়ারম্যান বেণু শ্রীনিবাসন, টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন এবং ট্রাস্টি দারিউস খাম্বাটাকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। কেন্দ্রের বার্তা, যে কোনও উপায়ে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং অভ্যন্তরীণ ফাটল যেন টাটা সন্সের পরিচালনকে প্রভাবিত না করে। এই গোষ্ঠীকে অস্থির করে তুলতে পারে এমন ট্রাস্টিদের সম্ভাব্য অপসারণ-সহ কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকার সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় দুই মন্ত্রী টাটা প্রতিনিধিদের আরও মনে করিয়ে দেন যে গোষ্ঠীর আকার, বাজার প্রভাব এবং অর্থনৈতিক গুরুত্বের কারণে ট্রাস্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশীদারিত্ব কার্যত জনসাধারণের দায়িত্ব বহন করে। আলোচনায় নিয়ন্ত্রক বিষয়গুলিও উঠে আসে, যার মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার টাটা সন্স সহ উচ্চ-স্তরের নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থাগুলির তালিকাভুক্তির আদেশ এবং টাটা সন্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশীদার শাপুরজি পালোনজি গ্রুপের সঙ্গে বিবাদ সমাধানের উপায় সন্ধান অন্তর্ভুক্ত ছিল। বৈঠকের পর, টাটার চারজন প্রতিনিধি সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ আলোচনা করে মুম্বই ফিরে যান। বৃহস্পতিবার টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দু’দিনের স্মরণসভা শুরু হয়েছে। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকার চলমান উত্তেজনাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। সরকারের আশা, টাটার ট্রাস্টগুলি অভ্যন্তরীণভাবে এবং গোপনে, কোনও প্রকাশ্য সংঘাত বা বৃদ্ধি ছাড়াই মতপার্থক্য সমাধান করবে। টাটা গ্রুপের ঘনিষ্ঠ সূত্র একটি টিভি চ্যানেলকে জানিয়েছে যে টাটা ট্রাস্টের চার ট্রাস্টির অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার নীরব দর্শক সরকার হতে পারে না। কারণ এই অবস্থা সংস্থার মধ্যে গুরুতর কর্পোরেট গভর্নেন্স উদ্বেগ বাড়িয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রতন টাটার মৃত্যুর পর থেকেই ট্রাস্টের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজন রয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে এই ফাটল আরও স্পষ্ট হয়েছে, যেখানে দোরাবজি টাটা ট্রাস্টের চারজন ট্রাস্টি একদিকে এবং নোয়েল টাটা-সহ অন্য তিনজন অন্যদিকে অবস্থান করছেন।