কালীপুজোর আগেই সহরাই ও বাঁধনা পরবের প্রস্তুতি শুরু

বাড়ি সাজানো, দেওয়ালে মাটির প্রলেপ দেওয়া, ছবি আঁকা, গবাদি পশু সাজা‍নোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে গোটা জঙ্গলমহল জুড়ে।

Must read

প্রতিবেদন : বাড়ি সাজানো, দেওয়ালে মাটির প্রলেপ দেওয়া, ছবি আঁকা, গবাদি পশু সাজা‍নোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে গোটা জঙ্গলমহল জুড়ে। উপলক্ষ কৃষিজীবী আদিবাসী সমাজের সবচেয়ে বড় উৎসব সহরাই ও বাঁধনা পরব। শালবনির শালিকা, বাগঘোড়া, গোয়ালতোড়, গুড়গুড়িপাল সর্বত্র তাই দেখা গেল বাড়ির মহিলারা ঘরদোর ধোয়ামোছায় ব্যস্ত, কোথাও আবার প্রাকৃতিক রং দিয়ে বাড়ির দেওয়ালে ফুল, পাখি, গাছ, গরুর ছবি আঁকছেন শিল্পীরা।

আরও পড়ুন-৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাজ্যের, দোমোহনিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র উন্নীত হবে ১০ শয্যার হাসপাতালে

বিশেষ পরবের এই দিনে গবাদি পশুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাঁওতাল, ভূমিজ, কুড়মি, লোধা-সহ বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ তাঁদের গৃহপালিত গরু, মোষ, গবাদি পশুদের স্নান করিয়ে পুজো করেন। তাঁদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্রাণীদের প্রতি ভালবাসার এই বহিঃপ্রকাশই হল সহরাই ও বাঁধনা পরব। এটি মূলত কৃষিপ্রধান পরব। কৃষিকাজের অন্যতম ভরসা গবাদি পশু। একসময়ে আদিবাসী সমাজে যাঁর যত গবাদি পশু থাকত, তিনি তত বিত্তবান বলে গণ্য হতেন। প্রাণীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানানোর জন্যে এই দুটি পরব পালন করা হত। আজও সেই ঐতিহ্য চালু আদিবাসী সমাজে। স্থানীয়দের কথায়, সহরাই আমাদের আবেগের উৎসব। কালীপুজোর সময় গোটা জঙ্গলমহল আনন্দে মাতে। পাশাপাশি এই পরব আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এই দুই পরবের প্রস্তুতির জন্যই গ্রামের মাঠ সাজছে খড়ের গাদায়। তেল মাখানো হচ্ছে গরু–মোষের শিঙে। প্রবীণদের মতে, শ্রমজীবী প্রাণীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশই হল সহরাইয়ের মূল বিষয়। বছরের পর বছর ধরে চাষের ভার বহন করা পশুদের এক দিনের জন্য বিশ্রাম দেওয়া হয়। সঙ্গে জানানো হয় স্নেহের পরশ। জঙ্গলমহলের এই দুই পরব কেবল উৎসব নয়, প্রকৃতি, প্রাণী ও মানুষের সহাবস্থানের প্রতীকও বটে। কালীপুজোর আগেই এই মিলন উৎসবের প্রস্তুতি এখন গোটা জঙ্গলমহলে।

Latest article