সমগ্র বাংলার মানুষের কাছে শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলেরই গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তা হল মাননীয়া জননেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আগামীর অধিনায়ক মাননীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের। বাংলায় বিজেপির ক্রমক্ষীয়মান সাংগঠনিক শক্তি, এবং বাংলার মানুষের কাছে পুরোপুরিভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়া গ্রহণযোগ্যতাকে সম্বল করে দেশের এবং রাজ্যের বিজেপি নেতারা যতই হাস্যকর আস্ফালন দেখাক না কেন, আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় ‘বিজেপির বিসর্জন’ অবধারিত। ইতিহাসের দিকে একটু ফিরলেই দেখা যায়, প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগ হোক কিংবা ঔপনিবেশিক যুগ, বাংলার ওপরেই সবার প্রথমে আক্রমণ নেমে এসেছে এবং প্রতিবারই প্রতিরোধ, প্রতিবাদের পথও বাংলাই দেখিয়েছে। এইসময়েও তার অন্যথা হয়নি।
আরও পড়ুন-রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে গণধর্ষণের চেষ্টা
অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আপামর যুবসম্প্রদায়ের আলোকশক্তি মাননীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুযোগ্য নেতৃত্বে এবং লড়াইয়ের ফলে নেতাজি- ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকীর বাংলাকে; বিবেকানন্দ- নজরুল-রবীন্দ্রনাথের বাংলাতে হিন্দুত্ববাদী মৌলবাদী ঐক্যবিদ্বেষী, সংবিধান-বিদ্বেষী বিজেপির বিনাশ আজ ‘আসন্ন। সদ্য দুর্গোৎসব সমাপ্ত হয়েছে। ঠিক একইভাবে ২০২৬ সালের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে চূড়ান্তভাবে পরাস্ত করে দুষ্টের দমন ও অশুভের বিনাশ এবং শুভশক্তির পুনরায় প্রতিষ্ঠা করবে মা-মাটি-মানুষের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। কিন্তু তার জন্য আরও বেশি করে সচেতন হতে হবে আমাদের সকলকে। মৌলবাদী, জুমলাবাজ বিজেপির কাজই হচ্ছে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভোট আদায়ের রাজনীতি করা। আর সেজন্যই বারবার অমিত শাহকে দিল্লি থেকে ছুটে আসতে হয় খাস কলকাতায়। এবারে পুজোতেও অমিত শাহ এসে যে বক্তব্য রাখলেন, তাতে ছিল ভূরি ভূরি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি আর অসত্য ন্যারেটিভ। মোহন ভাগবত, নরেন্দ্র মোদি হোক বা অমিত শাহ- বাংলাতে বারবার তাঁদের আসতে হয়, তার একটা বড় কারণ তাঁরা জানেন বাংলায় তৃণমূল সরকারের আমলে স্থায়ীভাবে যে সুষ্ঠু, অভূতপূর্ব উৎসবমুখরতা এবং অসাম্প্রদায়িক সংহতির আবহ তৈরি হয়েছে, তাতে ভাঙন
ধরানো সহজ নয়। তাছাড়া ভারতের যেক’টি রাজ্যে এই মুহূর্তে সবচেয়ে নিয়মনিষ্ঠভাবে সংবিধান মেনে চলা হচ্ছে, তার মধ্যেও অগ্রগণ্য বাংলা। সম্প্রতি এনসিআরবির রিপোর্টে ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহরও এই রাজ্যেরই কলকাতা। অর্থাৎ কোনওভাবেই পশ্চিমবঙ্গে কোনও ইস্যু নিয়ে সমস্যা তৈরি করতে পারছে না বিজেপি। এ রাজ্যের বিজেপি নেতারাও পরিকল্পনামাফিক দাঙ্গা লাগাতে ব্যর্থ। তাই বারবার করে কোনও একটা ইস্যু তৈরি করে নতুন কোনও সমস্যার সৃষ্টি করে আসন্ন নির্বাচনের প্রচারে সেটা কাজে লাগানোই বিজেপির উদ্দেশ্য। অবশ্য বিজেপির মতো মৌলবাদী ফ্যাসিস্ট দলের ‘মোডাস অপারেন্ডি’ সেটাই হওয়ার কথা। হিংসার রাজনীতি, ঘৃণার রাজনীতি, হিন্দু-মুসলিম, উচ্চ-দলিত প্রভৃতি বিভাজনের রাজনীতিতে পারদর্শী বিজেপির রাজনৈতিক মডেলটিকে যদি লক্ষ্য করা যায়, তাহলে বোঝা যাবে তাদের আদৌ কোনও জনমুখী বা জনহিতকর এজেন্ডাই নেই। কোনওদিন ছিলও না। তাদের রাজনীতি কেবলই ক্ষমতা দখলের জন্য ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতি।
অন্য সমস্ত রাজ্যে যেখানে যেখানে আজ ডবল ইঞ্জিনের সরকার, সেখানে বিজেপি সফল হয়েছে মানুষকে ভুল বোঝাতে, বিপথে চালনা করতে। কারণ সেখানে কোনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না। কিন্তু এই পবিত্র পুণ্যভূমি, বহু বিপ্লবীর রক্তের বলিদানে আজও সিক্ত এই বাংলাকে, বাঙালিকে বিপথে চালনা করা সহজ নয়। অন্তত জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন পর্যন্ত বাংলার
প্রহরী থাকবেন, ততদিন বাংলা অক্ষত থাকবে। গোটা দেশ জানে এবং মানেও, অন্য সব জায়গাতে বিজেপির আগ্রাসনের জয়ধ্বজা উড়লেও বাংলায় কখনও বিজেপির মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারার কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাননীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-২০২৫-এ বিজ্ঞানের নোবেলজয়ীরা
ফ্যাসিবাদী বিজেপি এখনও চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলার ঐক্য, বাংলার সংহতিকে নষ্ট করার, বাংলার অমলিন ঐতিহ্যকে কালিমালিপ্ত করার। এই ঔদ্ধত্য মেনে নেওয়া যায় না। তাই ফ্যাসিস্ট বিজেপি, বাংলাবিদ্বেষী বিজেপি, মৌলবাদী বিজেপি, নারীবিদ্বেষী বিজেপি, বাংলা ভাষা-বিদ্বেষী বিজেপির হাত থেকে বাংলাকে বাঁচাতে আমাদের জেতাতেই হবে মা-মাটি-মানুষের তৃণমূল কংগ্রেসকে। অন্তত আগামী একশো বছর তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া বাংলার আর কোনও বিকল্প নেই। তার চেয়েও বড় কথা, বাংলা নিরাপদ শুধু তার সে-ই মায়ের কাছে, যে তাকে বুকে ধরে আগলাবে। বাংলার সে-ই মায়ের নাম আমরা সবাই জানি- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা লড়ছেন, লড়বেন বাংলার জন্য, বাঙালির জন্য। সঙ্গে লড়ছেন আমাদের যুবনায়ক, একবিংশ শতাব্দীতে বাংলার যুবনাশ্ব মাননীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আগামীর বাংলা যাঁর হাতে নিশ্চিত, নিরাপদ। বাংলাকে তাই জেতাতে আবারও প্রয়োজন তৃণমূল কংগ্রেসের। আজ-কাল-পরশু এবং এক শতাব্দী পরেও। তাই ছাব্বিশে আমরা সিপিএমের মতোই বিজেপিকেও শূন্য করে দিয়ে পুনরায় বিপুল ভোটে জেতাব মা-মাটি-মানুষের দলকে, জেতাব বাংলাকে।