আর্থিকভাবে স্বনির্ভর ব্যক্তি ভরণপোষণ চাইতে পারেন না, এমনই রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। আদালত মনে করছে ‘স্থায়ী আলিমনি সমাজকল্যাণের প্রতীক, কোনও পক্ষের আর্থিক সমতা বা ব্যক্তিগত লাভের মাধ্যম হতে পারে না। এদিন বিচারপতি অনিল ক্ষেতরপাল এবং হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর সমন্বিত বেঞ্চ এই মামলার প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, ভরণপোষণ চাইলে আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে তাঁর প্রকৃত অর্থে অর্থনৈতিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন-গুজরাতে নদিয়ার যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য, শনিবার পৌঁছল দেহ
সূত্রের খবর এই মামলায় আবেদনকারী মহিলা ভারতীয় রেলওয়ের ট্রাফিক সার্ভিসের গ্রুপ ‘এ’-এর অফিসার। তাঁর স্বামী পেশায় একজন আইনজীবী। ২০১০ সালে তাঁদের বিয়ে হয়, কিন্তু মাত্র এক বছরের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙে যায়। স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নিম্ন আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন মহিলা। এখানেই শেষ নয়, দাবি করেন মোটা অঙ্কের খোরপোশ। ২০২৩ সালের অগস্টে নিম্ন আদালত বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করলেও খোরপোশের আবেদন খারিজ করে দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মহিলা দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-কালীপুজোয় বৃষ্টি থেকে স্বস্তি! উৎসবের মরশুমে কেমন থাকবে আবহাওয়া
বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্করের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আপিল খারিজ করে জানিয়ে দেয় বিবাহবিচ্ছেদের পরে খোরপোশ দেওয়া হয় আর্থিকভাবে নির্ভরশীল সঙ্গীকে সুরক্ষা দিতে। কিন্তু বিচ্ছেদ মানেই খোরপোশ পাওয়ার অধিকার তৈরি হয় না। এটি নির্ভর করছে আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থা ও প্রয়োজনের উপর। আবেদনকারী মহিলা একজন সরকারি আধিকারিক এবং তাঁর নিয়মিত ও যথেষ্ট পরিমান আয় রয়েছে। তিনি আর্থিকভাবে স্বামীর ওপর একেবারেই নির্ভরশীল নন। তাই এই ক্ষেত্রে খোরপোশের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
আরও পড়ুন-বিশাল হাতে শিল্ড বাগানের
এদিনের রায়ে আরও বলা হয়েছে, শুধুমাত্র আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ খোরপোশ চাইতে পারেন না। আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে তাঁর আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। মামলার নথিতে এমন কোনও তথ্য নেই যাতে বোঝা যায় আবেদনকারীর আর্থিক দুরবস্থা, শারীরিক অসুস্থতা বা পারিবারিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই খোরপোশের আবেদন খারিজ করা হয়েছে।
এই রায় নিঃসন্দেহে অনৈতিকতার বিরুদ্ধে বড় জয়। বিবাহবিচ্ছেদ মানেই খোরপোশ নয় এবং ভরণপোষণ কোনও আর্থিক পুরস্কার নয় সেই কথাই স্পষ্ট হয়ে গেল দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে।