মৌসুমী হাইত, পশ্চিম মেদিনীপুর: পরাধীন ভারতে ভিনদেশি এক সাধু মহতাবপুর এলাকায় উগ্র তারা মায়ের মন্দির গড়ে পুজোর শুরু করেন। তাঁর পরিচয় আজও জানা যায়নি। তিনি হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে কথা বলতেন। মন্দিরের পাশেই মেদিনীপুর শহরে হিন্দুদের দাহ করার একমাত্র ঘাট পদ্মাবতী মহাশ্মশান। তাই এই পুজো শ্মশানকালী মায়ের পুজো হিসেবেই খ্যাত। মন্দির কমিটির সদস্য সেবাইত তপন পাখিরা বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ভিনদেশি এক সাধুর হাত ধরে। মাঘ মাসের রটন্তী চতুর্দশী মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন। একসময় জায়গাটা ছিল ঝোপজঙ্গলে পূর্ণ।
আরও পড়ুন-উৎসবের শহরে নজরদারিতে মোতায়েন পাঁচ হাজার পুলিশ
হঠাৎই এখানে এক সাধু এসে তন্ত্রসাধনা শুরু করেন। কোথা থেকে এসেছিলেন, এলাকাবাসী জানতে পারেনি। একসময় তিনিই এলাকার পশুপতিনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে একটু জমি নিয়ে মন্দির গড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। শুনেছি মেদিনীপুর শহরের বক্সিবাজার এলাকার এক বাহ্মণ পরিবারের অবিবাহিতা তরুণীর অপঘাতে মৃত্যু হলে তাঁর শরীরের হাড়গোড় ও মাথার খুলি দিয়ে মূর্তি গড়েন সাধু। রটন্তী চতুর্দশীর রাতে পুজো শুরুর আগে নরবলি দেওয়া হত বলেও শুনেছি। যদিও ব্রিটিশ পুলিশ তাঁকে ধরতে এসেও নরবলির প্রমাণ পায়নি। ১২ বছর পরপর দেবীর ‘নবকলেবর’ হয়। সেই সময় দেবীমূর্তি কাঁসাই নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। নিরঞ্জনের আগে মূর্তি থেকে বের করে নেওয়া হয় হাড়গোড়। একইভাবে সেগুলি দিয়েই নতুন মূর্তি তৈরি হয়। পুরোহিত দুর্গাশঙ্কর মিশ্র বলেন, রটন্তী চতুর্দশীর পুজোয় কালীপুজো হয় ধুমধাম করে। অন্নভোগ খাওয়ানো হয়। ছাগবলি বন্ধ করে বর্তমানে লাউ, চালকুমড়ো প্রভৃতি বলি হয়।