ক্ষমতাসীন দল। তাই মানুষের জীবন, জমির মালিক যেন বিজেপি (BJP) নেতারাই। আর সেই জমি বিজেপি নেতার হাতে তুলে না দেওয়ায় ডবল ইঞ্জিন মধ্যপ্রদেশে বিজেপি নেতা গাড়ি চাপা দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলল এক কৃষককে। বাঁচাতে আসা স্ত্রী মেয়ের বুকে দাঁড়িয়ে কাপড় ছিঁড়ে চলল মধ্যযুগীয় বর্বরতা। চলল লাগাতার শূন্যে গুলি। ফলে ভয়ে তাঁদের রক্ষা করতে এগিয়েও আসতে পারলেন না গ্রামের মানুষ। ঘণ্টাখানেক পুরো সিনেমার কায়দায় গ্রামে তাণ্ডব চালালেও পুলিশ প্রশাসন সেখানে পৌঁছতেই পারেনি। ঘটনায় বিজেপি নেতার নামে অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে ব্যর্থ মধ্যপ্রদেশ পুলিশ।
আরও পড়ুন-অভিনব কায়দায় সতীশ শাহকে শ্রদ্ধা জানাল আমূল
বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের ফতেগড় এলাকার গণেশপুরা গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি নেতা মহেন্দ্র নাগরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ চাপ দিয়ে গ্রামের অন্তত ২৫ জন কৃষকের জমি কেড়ে নিয়েছে মহেন্দ্র নাগর। শুধু জমি কেড়ে নেওয়াই নয়। এইসব কৃষকদের গ্রাম ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে বিজেপির নেতা ও তার গুণ্ডারা।
গ্রামের কৃষক রামস্বরূপ ধাকড় কোনওমতেই নিজের জমি নাগরের হাতে তুলে দিতে রাজি হননি। ভয় দেখাতে মাঠে কাজে যাওয়ার সময় তাকে ঘিরে ধরে নাগর ও তার লোকজন। প্রথমে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়। রামস্বরূপের স্ত্রী বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তাতেও কৃষক রাজি না হওয়ায় তার বুকের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয় নাগরের গুণ্ডারা। সেইসময় রামস্বরূপ ও তাঁর স্ত্রীর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন তাঁর মেয়ে। নাগরের লোকেরা তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের কাপড় ছিঁড়ে তাদের হেনস্থা করে।
রামস্বরূপের ভাই রামকুমার দাবি করেন, অন্তত ২০ জন গুণ্ডা ঘিরে ধরে রামস্বরূপ ও তাঁর স্ত্রী মেয়েকে। তারা বন্দুক তুলে শূন্যে গুলি চালাতে থাকে। ফলে ভয়ে গ্রামের মানুষ তাঁদের বাঁচানোর জন্য যেতে পারেননি। এমনিতেও গ্রামের বহু পরিবার নাগরের অত্যাচারে ইতিমধ্যেই গ্রামছাড়া। প্রায় একঘণ্টা ধরে গ্রামে তাণ্ডব চালায় তারা। মৃত রামস্বরূপের দেহে বন্দুক তাক করে রাখে, যার ফলে তাকে চিকিৎসার জন্যও নিয়ে যাওয়া যায়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসার খুব একটা সুযোগও পাননি চিকিৎসকরা।
ঘটনায় ফতেগড় থানায় মহেন্দ্র নাগরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তার পরিবারের দুই মহিলা সদস্য ও ১৪ জন সঙ্গীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও পুলিশি তৎপরতায় আস্থা নেই গ্রামবাসীদের। তাঁদের দাবি বিজেপি নেতা মহেন্দ্র নাগরের ভয়ে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয় না। ফলে রামস্বরূপের মতো কৃষকদের ছয় বিঘা জমির জন্য প্রাণ দিতে হয়।

