ডিজিটাল প্রতারণা ও ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর একাধিক ঘটনায় এবার হস্তক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে জানিয়েছে, সারা দেশে তদন্ত চালাতে সিবিআই-কে (CBI) দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। আদালত মনে করছে এই ধরণের অপরাধের পিছনে আন্তর্জাতিক চক্রও থাকতে পারে। মায়ানমার, থাইল্যান্ড বা ভারতের বাইরে অন্যত্র এই জাল প্রসারিত থাকতেই পারে।
আরও পড়ুন-চালু দুধিয়ার হিউম পাইপ সেতু, পাহাড়-সমতলে স্বাভাবিক যান চলাচল
বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ এই বিষয়ে জানিয়েছে, ডিজিটাল অ্যারেস্ট মামলাগুলিতে আলাদা ভাবে তদন্তের প্রয়োজন। অপরাধীরা দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে বলেই মনে করা হচ্ছে কিংবা সীমান্তের ওপার থেকেও গোটা বিষয়টা পরিচালিত হতে পারে। তাই সিবিআই-এর হাতে তদন্ত ছাড়া বিকল্প নেই। প্রয়োজনে সিবিআইকে অতিরিক্ত সাইবার বিশেষজ্ঞ সরবরাহ করা হবে। আদালত নিজে এই তদন্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রয়োজনে জরুরি নির্দেশ জারি করা হবে। পরবর্তী শুনানি নভেম্বর ৩।
আরও পড়ুন-মর্মান্তিক! কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে বিধাননগর স্টেশনে জোড়া দুর্ঘটনা
প্রাথমিকভাবে হরিয়ানার আম্বালা জেলার এক প্রবীণ দম্পতির মামলা সিবিআই-এর হাতে তুলে দিয়েছে আদালত। ওই দম্পতি ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ফাঁদে পা দেন। ১৬ দিন ধরে ভয় দেখানো হয়েছিল তাদের। প্রতারকেরা নকল সুপ্রিম কোর্টের আদেশ এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ভুয়ো স্বাক্ষর দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ১.৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আদালত এদিন ক্ষুব্ধ হয়েই জানিয়েছে এই ধরনের ঘটনায় কিছুই সমাধান করা হচ্ছে না। মানুষ সময়ের সাথে সিস্টেমের উপর বিশ্বাস হারাচ্ছে। তাই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নিজেদের রাজ্যের ডিজিটাল প্রতারণার তথ্য আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিবিআই-এর পক্ষে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে জানিয়েছেন বহু ঘটনার সূত্র মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে পাওয়া যায়। এই সমস্যার পরিধি সাধারণ মানুষের ধারণার চেয়েও অনেক বড়। সমস্ত মামলা সিবিআই-এর হাতে তুলে দিলে তদন্তে দেরি হবে। ইতিমধ্যেই সিবিআই কিছু আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধের তদন্তে লিপ্ত আছে। থাইল্যান্ড বা মায়ানমারের মতো দেশ থেকে অপরাধ হলে ইন্টারপোল ও বিদেশি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ দরকার। তাই বিষয়টি খুব সহজে সমাধান হবে না।
আদালতও এই বিষয়টিকে মান্যতা দিয়ে এদিন জানিয়েছে এই ধরনের অপরাধ সিস্টেমের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। তাই কড়া পদক্ষেপ জরুরি।

