প্রতিবেদন : গোলশূন্য ডার্বি। ড্র করেই গ্রুপ শীর্ষে থেকে সুপার কাপের সেমিফাইনালে চলে গেল ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানের সামনে সহজ সমীকরণ ছিল। শেষ চারের ছাড়পত্র পেতে জিততে হত। ড্র হওয়ায় গোল পার্থক্যে ইস্টবেঙ্গলের থেকে পিছিয়ে থেকে সুপার কাপ থেকে ছিটকে গেল সবুজ-মেরুন। মোলিনার মোহনবাগানের খেলা দেখে মনে হয়েছে, তাদের জেতার কোনও ইচ্ছাই ছিল না। বরং বরং ডার্বিতে আধিপত্য ছিল ইস্টবেঙ্গলেরই। সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে তিন পয়েন্ট হাতছাড়া করল অস্কার ব্রুজোর দল। নক আউটের আগে যা চিন্তায় রাখবে ইস্টবেঙ্গলকে। গ্রুপ ‘এ’-তে তিন ম্যাচে দুই প্রধানেরই পয়েন্ট দাঁড়ায় ৫। ইস্টবেঙ্গলের গোল পার্থক্য ৪ এবং মোহনবাগানের ২। ডেম্পো-চেন্নাইয়িন ম্যাচ ১-১ ড্র হওয়ায় এর কোনও প্রভাব পড়েনি। ফলে গ্রুপ শীর্ষে থাকে ইস্টবেঙ্গলই। ম্যাচ শেষেই দু’দলের ফুটবলাররা ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতিতে জড়ালেন। মেহতাব, মিগুয়েল, সৌভিকদের ঝামেলা অবশ্য বড় আকার নেয়নি দলের বাকিদের হস্তক্ষেপে।
আরও পড়ুন-উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের ফল প্রকাশিত, প্রথম দশে ৬৯ জন, প্রথম স্থানে দক্ষিণ ২৪ পরগণা
চলতি মরশুমে মোহনবাগানের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। দেশি-বিদেশি ফুটবলারদের ফিটনেস, পারফরম্যান্স-গ্রাফ গত মরশুমের ধারেকাছে নেই। তুলনায় এবার ইস্টবেঙ্গল টিমের ভেদশক্তি অনেক বেড়েছে। দু’বছর আগের সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নদের সামনে খেতাব পুনরুদ্ধারের হাতছানি।
দুই প্রধানের দুই স্প্যানিশ কোচ সিঙ্গল স্ট্রাইকারে প্রথম একাদশ নামান। ইস্টবেঙ্গল কোচ আপফ্রন্টে হামিদ আহদাদকে রেখে ৪-৫-১ ফর্মেশনে শুরু করেন। মোহনবাগান কোচও তাই। ম্যাকলারেনকে উপরে রেখে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে দল নামান। সাহাল একটু নীচ থেকে অপারেট করেন। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার পর অস্কারের ছেলেরাই চাপে রাখে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের। মাঝমাঠে অনেক বেশি পাশ খেলেছেন মিগুয়েল-রশিদরা। মহেশ, বিপিনদের বিরুদ্ধে নিজেদের গুছিয়ে নিতে সমস্যায় পড়ছিল মোলিনার দল।
খেলা শুরুর মিনিট দুয়েকের মাথায় রাকিপের পাস থেকে গোলে জোরালো শট মারেন। বিশালের সামনে মোহনবাগান ডিফেন্ডার আলবার্তো ব্লক করায় বিপদ হয়নি। এরপর ইস্টবেঙ্গলেরই প্রাধান্য ছিল।২৪ মিনিটে বিপিনের হেড পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। মিনিট চারেক পর মহেশের গোলে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। ক্রেসপোর ভাসানো ক্রস থেকে শট নেন মহেশ। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরপর সুযোগ নষ্ট করে ইস্টবেঙ্গল। ৪২ মিনিটে মিগুয়েলের শট বাঁচান বিশাল। তার আগে আপুইয়ার শট ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন গিলকে সমস্যায় ফেলতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মোহনবাগান আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার চেষ্টা করে। প্রথম মিনিটেই লিস্টনের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। লিস্টন, জেমিদের ছটফটানি বাড়ে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে দাপট অব্যাহত রাখে। ৬১ মিনিটে সহজতম সুযোগ নষ্ট করেন হামিদ। ফাঁকায় বল পেয়ে মোহনবাগান গোলকিপারের হাতে মারেন। বিশাল সহজেই হাতের তালু দিয়ে বল বাইরে করে দেন।
মোহনবাগান কোচ কামিন্স, রোবিনহো, দিমিত্রিদের নামিয়ে জয়ের রাস্তা খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। ৭৮ মিনিটে প্রায় ফাঁকা গোলের সামনে বল টার্গেটে রাখতে পারেননি রবসন। ইস্টবেঙ্গল কোচও বিপিন, হামিদদের তুলে বিষ্ণু, হিরোশিকে নামিয়েছিলেন জয়ের লক্ষ্যে। মোলিনা আক্রমণে লোক বাড়িয়েছিলেন সুহেল ভাটকে এনে। কিন্তু গোল আর হয়নি ম্যাচে।

