বই অমর, বুঝিয়ে দিল শহরের একদিনের ভিজে বইয়ের মেলা

কোনও বাঁধা ধরা মণ্ডপ নয়, নয় কোনও ছোট ধাঁচার স্টল বা কিওস্ক, সম্বল শুধু পিভিসির টেবিল-চেয়ার। মাথার ওপর সকাল এগারোটা থেকে তিনটের খোলা আকাশ আর চড়া রোদ।

Must read

অনীশ ঘোষ: কোনও বাঁধা ধরা মণ্ডপ নয়, নয় কোনও ছোট ধাঁচার স্টল বা কিওস্ক, সম্বল শুধু পিভিসির টেবিল-চেয়ার। মাথার ওপর সকাল এগারোটা থেকে তিনটের খোলা আকাশ আর চড়া রোদ। তার পর থেকে সন্ধে ৮টা পর্যন্ত রোদ থাকার কথা নয়, তবে হেমন্তের স্নিগ্ধ বাতাসও ছিল না। তবু এই পরিবেশেই কলেজ স্কোয়ারের রাস্তার ওপর গত ২৩ সেপ্টেম্বরের এক রাতের আচমকা মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া বই নিয়ে বসে গিয়েছিলেন বইপাড়ার বিপর্যস্ত ২৫ জন প্রকাশক, বিক্রেতা। উপলক্ষ, একদিনের ভিজে বইয়ের মেলা।

আরও পড়ুন-পালানোর চেষ্টায় অভিযুক্তদের পায়ে গুলি! কোয়েম্বাটুরে কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ৩

আর সেখানেই গোটা দিন জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন বাংলার বইপ্রেমী মানুষ। আর তাতে ৮ ঘণ্টার মেলায় দিনভর বিক্রি হল প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ভিজে যাওয়া, কিঞ্চিৎ নষ্ট বই। এ কেবল বাংলাই পারে। কেননা বাঙালি জানে, বই কিনে কেউ কখনও দেউলিয়া হয় না (প্রমথ চৌধুরী উবাচ)। তাই তাঁরা যথাসাধ্য সাথ দিলেন কলকাতা ক্রিয়েটিভ পাবলিশার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সোমবারের এই মেলায়। সহযোগিতায় ছিল স্বনির্ভর ও দিল্লি বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন। পাশাপাশি এঁরা কলেজ স্ট্রিটের ৬৫ জন প্রকাশক, পুস্তক বিক্রেতা ও মুদ্রণ সহযোগী সংস্থার হাতে সহায়তা চেক তুলে দেন এদিন, সাম্প্রতিক ক্ষতির কিছুটা অন্তত সামাল দিতে। সেখানেও হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চিরকালীন কৃষ্টির বাহক বাঙালি পাঠককুল। সকালে মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত। আর মেলার শেষ করেন বাংলা পক্ষের সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, সমাজসেবী পিয়াল চৌধুরি প্রমুখ। সারা দিন ধরে এসেছেন, উদ্যোক্তা ও প্রকাশকদের উৎসাহ জুগিয়ে গিয়েছেন লেখক, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, শিক্ষক, প্রকাশক, গবেষক অনেকেই। সংস্থার সভাপতি অভিযান পাবলিশার্সের তরুণ কর্ণধার মারুফ হোসেন ও তাঁর সহযোগীদের এই কাজ বাংলা প্রকাশনা জগৎকে শত বিপর্যয়ের মধ্যেও মাথা তুলে দাঁড়ানোর দিশা দেখানোর পাশাপাশি বুঝিয়ে দিল, বইয়ের মৃত্যু হয় না, অন্তত এই বাংলায়।

Latest article