সেঞ্চুরিয়ন, ৩০ ডিসেম্বর : সেঞ্চুরিয়ন নিয়ে এতদিনের মিথ ভেঙে চুরমার বৃহস্পতিবার। এতদিন বলা হত, এখানে আফ্রিকানরা হারে না। পরিসংখ্যানও এই তথ্যেই সিলমোহর দিয়েছে। কিন্তু বিরাট কোহলিরা আফ্রিকানদের সেই পরম সুরক্ষিত দুর্গে তাদেরই বধ করে বার্তা ছুড়ে দিলেন, প্রথম টেস্ট তো গেলই, এই সিরিজও আর সুরক্ষিত নয় ডিন এলগারদের জন্য।
আরও পড়ুন-শচীনের সঙ্গে কথা বলুক বিরাট, দাবি গাভাসকরের
সুনীল গাভাসকর সকালে বলছিলেন, লাঞ্চেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাবে। তা হয়নি। কিন্তু লাঞ্চের পর বড়জোর দুটো ওভার খেলা গড়াল। দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে সাফ! লাঞ্চের পর প্রথম ওভারে শামি জেনসেনকে তুলে নেওয়ার পর রাবাডা ও এনগিডিকে পরের ওভারে পরপর দু’বলে তুলে নেন অশ্বিন। শেষপর্যন্ত ১৯১ রানে দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্ট হারল ১১৩ রানে। এই হারের ফলে তিন টেস্টের সিরিজে ০-১ পিছিয়ে পড়ল তারা। বিরাট পরে বললেন, এভাবেই সিরিজ শুরু করতে চেয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন-৩০ দিনে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনল খাদ্য দফতর
সেঞ্চুরিয়নের এই মাঠের নাম সুপার স্পোর্ট পার্ক। এখানে উইকেট আর আউটফিল্ডের রং প্রায় এক। পুরোটাই সবুজ। বলা হয় এখানে এখানকার উইকেট একটু একটু করে গতি নেয়। প্রথম দু-আড়াইদিন একটু স্লো। তারপর ভয়ঙ্কর ফাস্ট। বিরাট কোহলি সেটা বুঝেই আগে ব্যাট করে নিয়েছিলেন। বাকিটা বুমরা-শামিদের হাতে ছেড়ে দেন। যাঁরা অধিনায়কের ভরসার মর্যাদা দিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে বুমরা আর শামি তিনটি করে উইকেট নিলেন। দুই উইকেট সিরাজ ও অশ্বিনের। শামি ম্যাচে ১০৭ রানে আট উইকেট নিয়েছেন। এখানেই ৫৫ টেস্টে দুশো উইকেট হয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন-দুর্ঘটনায় কালনার বিধায়ক
আগেরদিন শেষবেলায় বুমরার জোড়া ধাক্কায় নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল আফ্রিকানদের ডিফেন্স। কিন্তু তখনও একপ্রান্তে এলগার টিঁকে ছিলেন, আর তাতেই অক্সিজেন জোগান চালু ছিল তাঁদের ইনিংসে। কিন্তু এদিন এলগারকে (৭৭) যেই বুমরা লেগ বিফোর করে করে দিলেন, তাঁদের যাবতীয় প্রতিরোধ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। একমাত্র বাভুমা কিছুটা লড়ে গেলেন। কিন্তু পাশে তিনি ডি’কক (২১), মুল্ডার (১) কাউকে পাননি। বাভুমা শেষপর্যন্ত নট আউট থেকে গেলেন ৩৫ রানে।
আরও পড়ুন-বর্ষবরণে মহানগরে বৃষ্টি নয়, জানাল হাওয়া অফিস
সেঞ্চরিয়ন আফ্রিকানদের এতটাই শক্ত ভূমি যে এর আগে এখানে কোনও এশীয় দল টেস্ট জেতেনি। বিদেশি দলের মধ্যে জিতেছে শুধু অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। কিন্তু এখানে প্রথম দিন মায়াঙ্ক ও রাহুল প্রথম উইকেটে শক্ত ভিত গড়ে দেওয়ার পর তার উপরে দাঁড়িয়ে সংহার মূর্তি ধরেন শামি-বুমরা-সিরাজ। বিরাট এদিন ম্যাচের পর দুই ওপেনারের প্রশংসা করার পাশাপাশি শামিকে বিশ্বের সেরা তিন সিমারের একজন বলে দিলেন। হয়তো এই প্রশংসাই তাঁকে আরও উজ্জীবিত করবে। ওয়ান্ডারার্সে পরের টেস্ট শুরু নতুন বছরের প্রথম দিন। সেখানে জিতে প্রথমবার এদেশ থেকে সিরিজ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বিরাটদের।
স্কোরবোর্ড, পঞ্চম দিন
ভারত (প্রথম ইনিংস): ৩২৭,
দক্ষিণ আফ্রিকা (প্রথম ইনিংস): ১৯৭, ভারত (দ্বিতীয় ইনিংস): ১৭৪
দক্ষিণ আফ্রিকা (দ্বিতীয় ইনিংস): মার্করাম বোল্ড শামি ১, এলগার এলবিডব্লু বো বুমরা ৭৭, পিটারসেন ক পন্থ বো সিরাজ ১৭, ডুসেন বোল্ড বুমরা ১১, মহারাজ বোল্ড বুমরা ৮, বাভুমা অপরাজিত ৩৫, ডি’কক বোল্ড সিরাজ ২১, মোল্ডার ক পন্থ বো শামি ১, জেনসেন ক পন্থ বো শামি ১৩, রাবাডা ক শামি বো অশ্বিন ০, এনগিডি ক পূজারা বো অশ্বিন ০। অতিরিক্ত: ৭। মোট (৬৮ ওভারে): ১৯১ রান। উইকেট : ৫-১৩০, ৬-১৬১, ৭-১৬৪, ৮-১৯০, ৯-১৯১, ১০-১৯১। বোলিং : বুমরা ১৯-৪-৫০-৩,
শামি ১৭-৩-৬৩-৩, সিরাজ ১৮-৫-৪৭-২, শার্দূল ৫-০-১১-০, অশ্বিন ৯-২-১৮-২।