প্রতিবেদন : বাংলা তথা দেশের সোনার মেয়েকে চোখ ধাঁধানো সংবর্ধনা দিল সিএবি ও রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের তরফে ভারতীয় বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য রিচা ঘোষকে (Richa Ghosh) দিলেন বঙ্গভূষণ, রাজ্য পুলিশের ডিএসপি পদে চাকরির নিয়োগপত্র এবং সোনার চেন। আর সিএবি দিল সোনার ব্যাট-বল। সঙ্গে ৩৪ লক্ষ টাকার চেক (বিশ্বকাপ ফাইনালে ৩৪ রান করেছিলেন রিচা) শনিবারের ইডেন গার্ডেন্স তার নানা ঐতিহাসিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আরও একবার ইতিহাস তৈরি করল। দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর পিছনে রিচার যে বিরাট অবদান, তাকে স্বীকৃতি দিয়ে ঐতিহাসিক ইডেন থেকেই আওয়াজ উঠল, জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখতে চাই রিচা ঘোষকে। সংবর্ধনা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, খেলাধুলোয় বাংলা এখন এগিয়ে। আগে এতটা ছিল না। তিনি কুর্নিশ জানালেন সিএবি-সহ তাঁর বাবা-মা, শ্যামাদেবী এবং কোচ, সহকারী এবং অবশ্যই ঝুলন গোস্বামীকে, যিনি রিচার ব্যাটিং প্রতিভা দেখে তাঁকে সিনিয়র দলে খেলার জন্য তুলে নিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঝুলনদের পরিশ্রম অধ্যবসায় ও ওদের জমি তৈরির ফসল পাচ্ছে রিচারা। তিনি একইসঙ্গে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন-সহ গোটা টিমকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- কবিগুরুর অপমান মানব না : শশী
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ইডেন গার্ডেন্সকে আমি বলি গোল্ডেন গার্ডেন। কারণ এখানে সোনা তৈরি হয়। এর অনেক ইতিহাস আছে। উপস্থিত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখিয়ে তিনি বলেন, সৌরভ বাংলা, দেশ এবং গোটা বিশ্বকে অনেক দিয়েছে। কিন্তু আমি সোজা কথা সোজাভাবে বলতে ভালবাসি। তাই বলছি, আইসিসি প্রেসিডেন্ট কার হওয়ার কথা ছিল— অবশ্যই সৌরভের। আমি বিশ্বাস করি ও হবেই। সৌরভকে আটকানো এত সহজ নয়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রিচা আরও বড় হোক। ওকে ওর ইচ্ছে পূরণ করতে দিন। আমি সেদিন সবচেয়ে বেশি খুশি হব, যেদিন ও ‘ফার্স্ট পজিশন’ পাবে। অর্থাৎ ইডেন গার্ডেন্সে যে আওয়াজ উঠেছে, আগামী দিনে মহিলা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে রিচা ঘোষকে দেখতে চাই।
রিচার (Richa Ghosh) প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, কে কী বলল ভাববে না। নিজের কাজ করে যেতে হবে। কুৎসা, অপপ্রচারে কান দেবে না। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ১৯৯১ সালে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী থাকাকালীন নইমুদ্দিন, রমাকান্ত আচরেকরদের দ্রোণাচার্য পুরস্কার দিয়েছিলেন, সেই কথাও স্মরণ করেন। উল্লেখ করেন বুলা চৌধুরীর অলিম্পিকে মেডেল আনার কাহিনিও।
এদিন রিচার ভূয়সী প্রশংসা করেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলার আর এক সোনার মেয়ে ঝুলন গোস্বামী স্মরণ করেন, রিচাকে খেলতে দেখে, ওঁর ব্যাটিং দেখে সিনিয়র দলে নেওয়ার সময় তাঁকে কতরকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। জলপাইগুড়ির মেয়ে। উত্তরবঙ্গের আর এক গর্ব বলে পরিচিত অভিনেত্রী মিমি রিচার হাতে একটি পুরস্কার তুলে দেন। এদিন মঞ্চে ছিলেন সিএবির সমস্ত কর্মকর্তা-সহ বাংলার ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। জমকালো সংবর্ধনা শেষে ইডেনের আকাশে চলে বাজির খেলা। সবটা দেখে-শুনে রিচা ঘোষ বলেন, জেতার পর থেকে ঘোরের মধ্যেই আছি। শিলিগুড়ির সংবর্ধনা, এখনকার সংবর্ধনা, পুরস্কার, আমাকে কেন্দ্র করে এত ভালবাসা— সবটাই স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।

