নয়াদিল্লি: বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ ভারত জলবায়ু (climate) পরিবর্তনের চরম প্রভাবগুলির প্রেক্ষিতে এখন ক্রমশ অরক্ষিত। তীব্র দাবদাহ, বিধ্বংসী বন্যা এবং শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মতো একসময়ের বিরল ঘটনাগুলিই এখন এই অঞ্চলের জন্য ‘নিউ নর্মাল’। ২০২৪ সালকে উষ্ণতম বছর হিসাবে নিশ্চিত করার পর জার্মানওয়াচ প্রকাশিত সর্বশেষ ‘ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স ২০২৬’ (জলবায়ু ঝুঁকি সূচক)-এর সর্বশেষ রিপোর্ট বিশেষভাবে তুলে ধরেছে যে কীভাবে চরম আবহাওয়ার প্রভাব পড়ছে বিশ্বের নানা দেশে। আবহাওয়া পরিবর্তনের তীব্রতা ভারত-সহ বিশ্বব্যাপী জীবন ও অর্থনীতিকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করছে।
আরও পড়ুন-প্রাথমিকে স্পেশাল এডুকেটর নিয়োগের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু
রিপোর্টে প্রকাশ, ১৯৯৫ থেকে ২০২৪ সালের দীর্ঘ ৩০ বছরের সময়কালে চরম আবহাওয়ার (climate) কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে ভারত রয়েছে ৯ নম্বরে। এই সময়কালে দেশে ৪৩০টিরও বেশি জলবায়ু বিপর্যয়ে প্রায় ৮০,০০০ মানুষের মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর প্রায় ৯.৬ শতাংশ। এর ফলে এদেশে আনুমানিক ১৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বে ৯,৭০০টিরও বেশি চরম আবহাওয়ার ঘটনা ৮,৩২,০০০ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে এবং প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছে। এই ৩০ বছরের সময়কালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে ছিল ডোমিনিকা, মায়ানমার এবং হন্ডুরাস। ডোমিনিকা বারবার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হয়েছে। পশ্চিম গোলার্ধের অন্যতম দরিদ্র দেশ হন্ডুরাস ঘূর্ণিঝড়, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়, বন্যা, খরা এবং ভূমিধসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার ঝুঁকিতে থাকা মায়ানমার ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় টাইফুন ত্যাগি-র কারণে। এই সূচকে দীর্ঘমেয়াদে (১৯৯৫–২০২৪) ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে ৯ নম্বরে থাকা ভারতে প্রায় ৮০,০০০ মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে, যা চরম আবহাওয়ার ঘটনা থেকে বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর ৯.৬ শতাংশ। গত তিন দশকে খরা, ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহ এবং বন্যা-সহ ৪৩০টিরও বেশি জলবায়ু বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় ভারত। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাণহানি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলির মধ্যে রয়েছে ১৯৯৮ সালের গুজরাত ও ১৯৯৯ সালের ওড়িশা ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন হুদহুদ (২০১৪) ও আমফান (২০২০), ২০১৩ সালের উত্তরাখণ্ড বন্যা এবং ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যা। এছাড়া প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, ১৯৯৮, ২০০২, ২০০৩ এবং ২০১৫ সালে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা-সহ অস্বাভাবিক তীব্র তাপপ্রবাহ বহু মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। পূর্ণাঙ্গ ক্রমতালিকা অনুসারে, চিন ১১, বাংলাদেশ ১৩, পাকিস্তান ১৫ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮ নম্বরে রয়েছে।

