ওটা বিহারের সমীকরণ, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন জিতবে: জবাব তৃণমূল কংগ্রেসের

একই সঙ্গে বিহারে ফলকে সামনে রেখে বিজেপি-বিরোধিতায় কংগ্রেস যে ব্যর্থ, তা আবার প্রমাণিত হল বলে দাবি কুণালের।

Must read

বিধানসভা নির্বাচনের এখনও পর্যন্ত ম্যাজিক ফিগার ছাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছে এনডিএ (NDA)। আর এই ফল দেখার পরেই লাফাচ্ছেন বিজেপির জাতীয় ও বঙ্গ নেতৃত্ব। তাঁদের আশা এবার বাংলা দখল করবেন। তাঁদের সেই তুলনা কার্যত উড়িয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার, ভোটের ফলে স্পষ্ট হতেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “ওটা বিহারের সমীকরণ। বাংলার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। বাংলায় প্রভাব পড়বে না। বাংলায় উন্নয়ন, ঐক্য, সম্প্রীতি, অধিকার, আত্মসম্মান ফ্যাক্টর। বিহারের সঙ্গে কষ্টকল্পিত তুলনা করবেন না“।

আরও পড়ুন-শিশু দিবস উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা

এখনও পর্যন্ত বিহারে এনডিএ ১৯৫, আর মহাগাঠবন্ধন ৪৩টি আসনে এগিয়ে বা জয়ের পথে। এই পরিস্থিতিতে ২০২৬-এর বাংলার বিধানসভা নির্বাচনকে নিশানা করেছে গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, “বিহারের পর এবার বাংলার পালা।” শুভেন্দু অধিকারী থেকে বঙ্গ বিজেপি ছোট-বড়-মেজো নেতা সবার মুখেই এখন বাংলার নাম। আর এই পরিস্থিতিতে পদ্মশিবিরকে ধুয়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “বাংলায় শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা।” এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কুণাল। বলেন, “ওটা বিহারের সমীকরণ। বাংলার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। বাংলায় প্রভাব পড়বে না। বাংলায় উন্নয়ন, ঐক্য, সম্প্রীতি, অধিকার, আত্মসম্মান ফ্যাক্টর। ২৫০+ আসন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন।”

আরও পড়ুন-আজ বিহারের বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশ

বিহারকে দেখিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের বাংলায় হুমকি দেওয়ার বিষয় নিয়েও সুর চড়ান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। বলেন, “বিহার দেখিয়ে বাংলাকে হুমকি দিয়ে বিজেপির যে নেতারা বিবৃতি দিচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন, তাঁরা অকারণ সময় নষ্ট করছেন। বাংলার মানুষের অধিকার, আত্মসম্মানকে আঘাত করে, শুধু অন্য রাজ্য দেখিয়ে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। এখানে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা। বিহার-সহ বহু রাজ্য তাঁর উন্নয়নের মডেল ফলোও করছেন। বাংলার মানুষ সার্বিক স্বার্থেই তৃণমূলকে সমর্থন করেন এবং করবেন।”

তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তীর মতে, “ওদের রুখতে যা পরিকাঠামো প্রয়োজন, কংগ্রেস তা তৈরি করতে পারেনি। ওদের হারাতে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সফল। তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। ভোটের সময় ভোটচুরি আটকাতে হয়, যেটা তৃণমূল পেরেছে। কংগ্রেস সেটা পারেনি, ওদের সেই পরিকাঠামো নেই। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে দেশে একমাত্র ভরসাযোগ্য মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

SIR-কে কেন্দ্র করে রাজ্যে বিজেপি ও কমিশনের ‘চক্রান্ত’ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির ‘অপব্যবহারের’ বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক দিয়েছে তৃণমূল। একই সঙ্গে বিহারে ফলকে সামনে রেখে বিজেপি-বিরোধিতায় কংগ্রেস যে ব্যর্থ, তা আবার প্রমাণিত হল বলে দাবি কুণালের।

সুদীপ রাহা জানিয়ে দিলেন, ”বিহারে নির্বাচনের ফলাফল দেখে বাংলার বিজেপি নেতাদের এত উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। বিহার আলাদা। বাংলা আলাদা।২০২০ সালে যারা বিজেপির ফলাফল নিয়ে লাফালাফি করেছিল, ২০২১ বাংলায় তারাই মুখ থুবড়ে পড়েছিল।
আর যেসব মিডিয়া বলছে, SIR এর পর বিজেপি/ এনডিএ-এর বিরাট জয়; তারা শুনুন, বাংলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম SIR এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই আন্দোলনের জোয়ারকে পৌঁছে দিচ্ছেন একেবারে তৃণমূল স্তরে। আমাদের প্রতিবাদ-আন্দোলন পাওয়ার পয়েন্টে দেখানো প্রেস কনফারেন্সে সীমাবদ্ধ নয়। তাই বাংলার নির্বাচনের ফলাফল অবধি অপেক্ষা করুক বিজেপি-বান্ধব সংবাদমাধ্যমগুলো।
সবচেয়ে বড় কথা, একদিন পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে বিজেপিকে হারানো যায় না। সারাবছর হোমওয়ার্ক করে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপাতে হয়, যেটা বাংলায় Abhishek Banerjee করে দেখাচ্ছেন। বিজেপিকে হারাতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপির রথের চাকা আটকে দিতে পারে বাংলা; সেটা আজ আবার প্রমাণ হয়ে গেল।
তাই, বাংলায় বাংলা বিরোধী বিজেপির আস্ফালনই সার হবে। মানুষের আশীর্বাদে জমিদারদের হারিয়ে চতুর্থবারের জন্য নবান্নে পৌঁছবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিহারের ফলাফল দেখে যারা স্বপ্ন দেখছেন, তাদের স্বপ্নভঙ্গ করে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের রেকর্ড নিজেরা ভাঙবে। দুই তৃতীয়াংশের অনেক বেশি আসন নিয়ে জিতবে তৃণমূল।”

Latest article