প্রতিবেদন : রাজ্য সরকার কলকাতায় ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার নিয়ে নতুন করে সমীক্ষা শুরু করতে চলেছে । শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঠিক কতটা ভূগর্ভস্থ জল তোলা হচ্ছে এবং কোথায় তার ওপর চাপ বাড়ছে তা খতিয়ে দেখতে এই সমীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালের পশ্চিমবঙ্গ ভূগর্ভস্থ জল সম্পদ (ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, অনুযায়ী এই সমীক্ষা পরিচালিত হবে। এই সমীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করেই সেচ, শিল্প, বাণিজ্যিক, গৃহস্থালি, পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো যে কোনও উদ্দেশ্যে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহারের নয়া গাইডলাইন তৈরি করা হবে। রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের বহু এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। সে কারণে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের পুরনো তথ্য যাচাই করা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন-জালিয়াতির অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এবার গণভিসা বাতিল করতে চায় কানাডা
শহরে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহযোগ্য পানীয় জলের পরিমাণ বাড়লেও ভূগর্ভস্থ জল এখনও বহু ক্ষেত্রে প্রধান উৎস। ছোট ব্যবসা, আবাসন প্রকল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মাণ ক্ষেত্র—অনেকেই এখনও ব্যক্তিগত বা পুরনো টিউবওয়েলের ওপর নির্ভর করে। কোন এলাকায় এই তোলার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে, আর কোথায় তা জলস্তরের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে সেই বিশদ বোঝার লক্ষ্যেই সরকারের এই উদ্যোগ।
সমীক্ষার অংশ হিসেবে স্থানীয়ভাবে সমীক্ষা, টিউবওয়েলের অবস্থান যাচাই এবং বিভিন্ন অঞ্চলের জলস্তরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার কোন মাত্রায় বাড়ছে, কোথায় নিয়ন্ত্রণ কড়া করা জরুরি, আর কোন এলাকায় নতুন অনুমতি দেওয়া সম্ভব—তা নির্ধারণেই এই পর্যালোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
আরও পড়ুন-দুই থ্রিলারের তৃতীয় সিজন
জলবায়ু পরিবর্তন ও নগরায়নের বাড়তি চাপে যখন দেশের বহু শহর জলসংকটের মুখে, তখনই এই উদ্যোগকে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, কলকাতার ভূগর্ভস্থ জলের অবস্থান সম্পর্কে সূক্ষ্ম ধারণা সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেবে। কোথায় অনুমতি দেওয়া হবে, কোথায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে, কিংবা কোন ক্ষেত্রে বিকল্প উৎস ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া উচিত—সমীক্ষার রিপোর্ট সেই সিদ্ধান্তে পথ দেখাবে।
সমীক্ষা শেষ হলে শহরের আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পাঞ্চলে ঠিক কীভাবে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার হচ্ছে তার একটি স্পষ্ট চিত্র হাতে পাবে প্রশাসন—যা কলকাতার জল সংরক্ষণ এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণে বড় ভূমিকা নেবে।

