প্রতিবেদন : বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে দোষী সাব্যস্ত দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষিত হল। সেই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হল তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে। আর এক অভিযুক্ত তৎকালীন পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হল। রায় ঘোষণার আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা। স্বৈরাচারী প্রক্রিয়ায় এক পক্ষের বক্তব্যের ভিত্তিতেই রায় ঘোষণা করল বাংলাদেশের আইসিটি, অভিযোগ আওয়ামি লিগের। সোমবার এই রায় ঘোষণা করে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এদিন বিচারপতি গোলাম মোর্তাজার নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রায়ের বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনানো শুরু করতেই বিক্ষোভ ও অরাজকতা শুরু হয়ে যায় ঢাকা শহরে।
আরও পড়ুন-এসআইআরের নামে বিজেপির হয়ে ‘রিগিং’ নির্বাচন কমিশনের
রায় ঘোষণার পরই মুখ খুলেছেন শেখ হাসিনা। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যে হত্যা হয়েছিল তার নির্দেশ তিনি দেননি। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আওয়ামি লিগের অস্তিত্ব মুছে ফেলতে এই রায় দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় তাঁর কোনও বক্তব্যই শোনা হয়নি অভিযোগ তুলে আইসিটি-কেই পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত হেগে যাওয়ারও চ্যালেঞ্জ জানান বঙ্গবন্ধু-কন্যা। সোমবার বাংলাদেশ আইসিটি মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার পর যে বিবৃতি প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা, তাতে কার্যত স্পষ্ট এই রায়ের অপেক্ষা তিনি করেছিলেন। এমন রায় হবে সেটাও তাঁর কাছে প্রত্যাশিত ছিল। বিবৃতিতে তিনি দাবি করেছেন, জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের সময় তাঁর প্রশাসন সর্বতোভাবে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল দেশে গণতন্ত্র রক্ষা করার। জীবন হানি যতটা সম্ভব কম করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তাঁর প্রশাসন কোনও গণহত্যার নির্দেশ দেয়নি। হাসিনা আরও দাবি করেন, আন্দোলন চলাকালীন বাইরের শক্তির দ্বারা যেভাবে প্রভাব খাটানো হয়েছিল, তা নিয়ে কোনও তদন্ত হয়নি। উসকানি-সংক্রান্ত বিষয়গুলি তদন্তের বাইরেই রয়ে গিয়েছে। এইসব যুক্তি তুলে ধরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেন তিনি। তাঁর দাবি, এই আদালত থেকে পূর্ববর্তী প্রশাসনের প্রতি নরম মনোভাব পোষণকারী বা তাঁদের সমর্থক সব বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র আওয়ামি লিগের সদস্যদেরই বিচার হয়।

