প্রতিবেদন : দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট হেরে প্রবল চাপে টিম ইন্ডিয়া। আগামী শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। যা ভারতের কাছে সিরিজ বাঁচানোর মঞ্চ। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে ইডেনে ঘণ্টা তিনেক প্র্যাকটিস করলেন ভারতীয়রা। বুধবার কলকাতা থেকে দুপুর দেড়টার বিমানে গুয়াহাটি উড়ে যাবে দল। একই বিমানে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা দলও।
আরও পড়ুন-গুয়াহাটিতেও ঘূর্ণি উইকেট, থাকবে বাউন্স
কোচ গৌতম গম্ভীর-সহ পুরো কোচিং স্টাফ মাঠে থাকলেও, ঐচ্ছিক অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন জনা ছয়েক ক্রিকেটার। এই তালিকায় রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা, সাই সুদর্শন, ধ্রুব জুরেল, দেবদত্ত পাড়িক্কল, ওয়াশিংটন সুন্দর এবং আকাশ দীপ। প্রত্যাশিতভাবেই অধিনায়ক শুভমন গিল ছিলেন অনুপস্থিত। ভারতীয় শিবির সূত্রের খবর, গুয়াহাটি টেস্ট থেকে শুভমন কার্যত ছিটকেই গিয়েছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে আপাতত তিন-চারদিন বিশ্রাম নিতে বলেছেন। বুধবার দলের সঙ্গে শুভমন আদৌ গুয়াহাটি যাবেন কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
এদিনের প্র্যাকটিসে গম্ভীর এবং ব্যাটিং কোচ সিতাংশু কোটাককে তাই দেখা গেল সুদর্শন ও পাড়িক্কলের সঙ্গে বাড়তি সময় কাটাতে। শুভমনের অনুপস্থিতিতে এই দু’জনের একজন গুয়াহাটি টেস্টে খেলবেন। তবে পাল্লা ভারি সুদর্শনেরই। নেটে পেসারদের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সময় অবশ্য বেশ নড়বড়ে দেখিয়েছে সুদর্শনকে। আকাশ দীপের আউট স্যুইংয়ে বেশ কয়েকবার পরাস্তও হলেন তিনি। এমনকী, নেট বোলারদের বিরুদ্ধেও খুব একটা স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। এদিকে, শুভমনের অনুপস্থিতিতে গুয়াহাটিতে নেতৃত্ব দেবেন ঋষভ পন্থ। অন্যদিকে, সোমবারই শহরে চলে এসেছেন অলরাউন্ডার নীতীশ রেড্ডি। তাঁকে দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।
ইডেনের ঘূর্ণি পিচে প্রোটিয়া স্পিনারদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। গুয়াহাটিতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি গম্ভীরের। এদিন তাই অভিনব পদ্ধতি দেখা গেল ভারতীয় নেটে। সুদর্শন, জুরেলরা স্পিনারদের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নামলেন এক পায়ে প্যাড পরে! ঘূর্ণি পিচে ব্যাটারদের সামনের পায়ে প্যাডে খেলার একটা প্রবণতা থাকে। তাতে এলবিডব্লু-র শিকার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ইডেনে জাদেজা দু’ইনিংসেই এভাবে আউট হয়েছিলেন। সেটা শোধরাতেই এক পায়ে পায়ে প্যাড পরে প্র্যাকটিস।
আরও পড়ুন-সুন্দরবনের উপকূল রক্ষায় ৪১০০ কোটি টাকার ‘শোর’ প্রকল্প, প্রযুক্তিগত সহায়তায় নেদারল্যান্ডস
বাঁ হাতি সুদর্শন যেমন ডান পায়ের প্যাড খুলে রেখে ব্যাট করেছেন। একই ভাবে ডানহাতি জুরেল বাঁ পায়ের। এতে ফ্রন্টফুটে খেলার সময় ব্যাটেই খেলতে বাধ্য হয়েছেন ব্যাটাররা। কারণ পায়ে প্যাড নেই। তাই মিস হলেই আঘাত লাগার ঝুঁকি। পাশাপাশি জোর দেওয়া হয়েছে ফুটওয়ার্কে। ইডেনে প্রোটিয়া স্পিনারদের বিরুদ্ধে ব্যাটারদের ব্যাকফুটে আটকে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন কোচিং টিম। তাই এদিনের নেটে ব্যাটারদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়—স্পিনের বিরুদ্ধে পায়ের ব্যবহারে জোর দিতে। একই সঙ্গে চলে রিভার্স সুইপ মারার প্র্যাকটিসও। তবে নেটে সবথেকে বেশি সময় ধরে ব্যাট করেছেন জাদেজা।
ইডেনের হার এবং পিচ-বিতর্ক নিয়ে প্রবল চাপে রয়েছেন গম্ভীরও। তাঁর কোচিংয়ে দেশের মাটিতে শেষ ছ’টি টেস্টের মধ্যে চারটিতেই হারতে হয়েছে। যে দু’টিতে জয় পেয়েছেন, তা এসেছে দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ফলে গুয়াহাটি টেস্ট গম্ভীরের কাছেও অ্যাসিড টেস্ট। সিরিজ বাঁচাতে না পারলে, আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বেন। তবে বরাবরের মতোই গম্ভীরের শরীরী ভাষায় ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব। এদিন প্র্যাকটিসের শুরুতেই ইডেনের পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়কে দেখে যেভাবে জড়িয়ে ধরলেন, তাতে বার্তাটা পরিষ্কার— হাম ঝুঁকেগা নেহি!

