বিজেপি রাজ্যেই অবাধে সন্ত্রাসের চাষ?

হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই দিল্লির লালকেল্লা চত্বরে সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল চক্রান্ত হয়েছিল, উঠে আসছে তদন্তে।

Must read

ফরিদাবাদ : বিজেপি রাজ্যেই অবাধে সন্ত্রাসের চাষ! হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই দিল্লির লালকেল্লা চত্বরে সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল চক্রান্ত হয়েছিল, উঠে আসছে তদন্তে। গোয়েন্দা সূত্রে বিস্ফোরক ইঙ্গিত, বিজেপি শাসিত হরিয়ানার এই বিশ্ববিদ্যালয়টি কার্যত পাক-মদতপুষ্ট ভারতবিরোধী ষড়যন্ত্রের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। কিন্তু লালকেল্লার সামনে আত্মঘাতী হামলার আগে কেন এই বিপজ্জনক জঙ্গি নেটওয়ার্কের খোঁজ পেল না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, সেই প্রশ্ন সঙ্গতভাবেই উঠছে। ১৫ জনের মৃত্যুর বিনিময়ে অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসনের। গোয়েন্দা তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এখন দেখা যাচ্ছে, আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত কমপক্ষে ১০ জন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের নাগাল পেতে হন্যে হয়ে খুঁজছেন গোয়েন্দারা। বুধবার এনডিটিভিকে দেওয়া ইন্টেলিজেন্স সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিখোঁজদের মধ্যে অন্তত তিনজন কাশ্মীরি শিক্ষার্থী বা কর্মী রয়েছেন এবং তাদের মোবাইল ফোনগুলি বর্তমানে বন্ধ। এই ঘটনাকে লালকেল্লা বিস্ফোরণের তদন্তে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-দূষণের মধ্যে খেলাধুলো করার অর্থ শিশুদের গ্যাস চেম্বারে রাখার ব্যবস্থা

প্রাথমিক পর্যায়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব না হলেও গোয়েন্দা ইনপুটগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নিখোঁজ ব্যক্তিরা সেই ‘সন্ত্রাসবাদী ডাক্তার’ মডিউলের অংশ হতে পারে, যারা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জ্বালানি তেল দিয়ে ভর্তি একটি হুন্ডাই আই-২০ গাড়িকে লালকেল্লার বাইরে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছিল। এই বিস্ফোরণ ছিল দিল্লিতে গাড়িতে স্থাপিত বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহারের প্রথম ঘটনা, যেখানে ১৫ জন নিহত হন এবং এর নেপথ্যে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের একটি সেল কাজ করছিল বলে জানা যাচ্ছে। এর আগে জানা গিয়েছিল, জইশ-ই-মহম্মদ আরও আত্মঘাতী বা ‘ফিদায়েইন’ হামলা চালানোর জন্য ডিজিটাল উপায়ে (যার মধ্যে সাদাপে নামক একটি পাকিস্তানি অ্যাপও রয়েছে) ‘ডোনেশন’-এর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের ডাক দিয়েছে। একইসঙ্গে মহিলা-নেতৃত্বাধীন হামলারও ছক কষা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জইশ-এর একটি ‘মহিলা শাখা’ রয়েছে, যার নাম জামাত উল-মুমিনাত, এবং পুলওয়ামা হামলার সামরিক প্রতিক্রিয়ার পর এটি পুনর্গঠিত হয়। লালকেল্লা বিস্ফোরণের অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন— ডাঃ শাহিনা সাঈদ, যার কোডনেম ছিল ‘ম্যাডাম সার্জন’, তিনিও এই মহিলা শাখার সদস্য ছিলেন। বিস্ফোরণে নিহত আই-২০ গাড়ির চালক ছিলেন ডাঃ উমর মোহাম্মদ। এই হামলার ঘটনায় আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজের তিন ডাক্তার-সহ মোট নজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জাওয়াদ আহমেদ সিদ্দিকিও গ্রেফতার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন সংক্রান্ত অর্থ পাচারের একটি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট গ্রেফতার করেছে। এই ধারাবাহিক গ্রেফতারি এবং ১০ জন ব্যক্তির রহস্যজনক নিখোঁজ হয়ে যাওয়া দিল্লিতে একটি বড় ধরনের সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কের অস্তিত্বের দিকেই ইঙ্গিত করছে, যার শিকড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভীরে প্রোথিত বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Latest article