প্রতিবেদন : ঘাতক এসআইআরে (SIR) রাজ্যে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনের তৈরি করা ভয়ের পরিবেশে প্রাণ হারাচ্ছেন বাংলার মানুষ। ভোটার তালিকা-সংক্রান্ত সমস্যার জেরে রাজ্যের তিন জেলায় মৃত্যু হল তিন সহনাগরিকের। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধের। তিন ক্ষেত্রেই পরিবারের অভিযোগ, ২০০২-এর ভোটার তালিকায় নাম-সংক্রান্ত দুশ্চিন্তার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁদের।
পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাটের বছর ৮৩-র কেসিমন বিবির নাম ২০০২-এর ভোটার তালিকায় আসেনি। অথচ তিনি ২০০২-এও ভোট দিয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। ১৯৭১ সাল থেকে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কেসিমন বিবির। বেশ কয়েকদিন ধরে দুশ্চিন্তায় খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। শুধু কেসিমন বিবিই নন, তাঁর ছেলে শেখ নাসিরুদ্দিনেরও নাম নেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায়। ভোগপুর পঞ্চায়েতের শেখ নাসিরুদ্দিন জানান, তাঁর মা ভোটার তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
আরও পড়ুন- ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মের বিরোধী নয় ফেডারেশন
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের ঠাকুরচকে বাড়ি আবুতালেব সর্দারের। তিনি বংশ-পরম্পরায় বাংলার বাসিন্দা। বহু বছর ধরে ভোট দিয়ে আসছেন। ২০০২-এর আগের ভোটার তালিকাতে তাঁর নাম থাকলেও ২০০২ সালের তালিকায় তাঁর নাম নেই। কোনও অদৃশ্য কারণে তাঁর নাম ২০০২-এর তালিকায় নেই। তা নিয়ে আতঙ্কের জেরে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদেও এসআইআর-আতঙ্কে (SIR) হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। ভগবানগোলার বাহাদুরপুরের বাসিন্দা ইরফান খানের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল। এবং সঠিক নামই ছিল। কিন্তু এসআইআরের ফর্মে তাঁর নাম বদলে যায়। তাঁর ডাকনামটি নির্বাচনী ফর্মে চলে আসে। আর তাই নিয়েই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন ইরফান। পরিবারের সদস্যরা জানান, এসআইআর ফর্ম হাতে পাওয়ার পর থেকে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। মারণ এসআইআর গ্রাস করে তাঁকেও।

