শ্রমবিধি রূপায়ণের ঘোষণায় কেন্দ্র, তীব্র বিরোধিতায় তৃণমূল

উল্লেখ্য, ভারতের শ্রম আইনগুলি বেশিরভাগই স্বাধীনতার আগের বা স্বাধীনোত্তর প্রাথমিক অবস্থা (১৯৩০ থেকে ১৯৫০) এই সময়কালে তৈরি হয়েছিল।

Must read

প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। চারটি শ্রমবিধি রূপায়ণ ঘোষণা। বিধিগুলি হল মজুরি বিধি ২০১৯, শিল্প সম্পর্ক বিধি ২০২০, সামাজিক নিরাপত্তা বিধি ২০২০ এবং পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের শর্ত বিধি ২০২০। ২১ নভেম্বর থেকেই এগুলি কার্যকরী হল। ২৯টি শ্রমবিধির জায়গায় নতুন এই চারটি বিধি আনা হয়েছে। যদিও এর তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমুল কংগ্রেস। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই আইন শ্রমিক বিরোধী। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এর বিরোধী। তাই রুল ফ্রেম করেননি। তামিলনাড়ু-সহ আরও অনেক রাজ্যও করেনি। রাজ্যগুলি রুল ফ্রেম না করলে কেন্দ্র এটা করতেই পারে না। ওরা মিনিমাম ফ্লোর ওয়েজেসের কথা বলছে, অথচ এটা শেষবার ফিক্স হয়েছে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে। আমরা এই অন্যায় কাজ মানছি না। তীব্র প্রতিবাদ হবে। দলের আর এক নেত্রী ও সাংসদ দোলা সেন বলেন, এটা সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যখন ফার্ম বিলের বিরোধিতার সময় সাংসদের রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হল, তখন রাজ্যসভায় ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে। আমি লেবার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ডিসেন্ট নোট দিয়েছিলাম অথচ সেটা ধর্তব্যের মধ্যেই আনা হয়নি। মোদিবাবু আর কর্পোরেট বন্ধুদের জন্য এটা করেছেন। আর সবথেকে বড় কথা, রাজ্যগুলি রুল ফ্রেম না করলে কেন্দ্র এটা করতেই পারেন না। আমাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সরকার রুল ফ্রেম করেনি। মিজোরাম-সহ আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যও করেনি। তবুও গায়ের জোরে এটা করা হল। সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি। এটা শ্রমিক স্বার্থ-বিরোধী।

আরও পড়ুন-বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলেই হবে তীব্র আন্দোলন : মনোজ

উল্লেখ্য, ভারতের শ্রম আইনগুলি বেশিরভাগই স্বাধীনতার আগের বা স্বাধীনোত্তর প্রাথমিক অবস্থা (১৯৩০ থেকে ১৯৫০) এই সময়কালে তৈরি হয়েছিল। সেই সময় বিশ্ব পরিস্থিতি এবং অর্থনীতির পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। বেশিরভাগ প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন দেশ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাদের শ্রমবিধির সংস্কার এবং আধুনিকীকরণ ঘটিয়েছে। কিন্তু ভারতে সেকেলে ২৯টি কেন্দ্রীয় শ্রমবিধি চালু ছিল। এই নিয়ন্ত্রণমূলক পরিকাঠামো পরিবর্তিত অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও কর্মসংস্থানের সঙ্গে খাপ খায় না। ফলে, এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং শিল্প ও শ্রমিক উভয় ক্ষেত্রেই উত্তরোত্তর বাধ্যবাধকতার বোঝা সৃষ্টি করে। বহু কাঙ্ক্ষিত প্রয়োজনের দিকে তাকিয়ে চারটি শ্রমবিধির রূপায়ণ শুধু যে ঔপনিবেশিক সময়কালের কাঠামোর চৌহদ্দিকে ডিঙিয়ে যেতে পারবে তা নয়, আধুনিক বিশ্বচলতি ধারার সঙ্গে তা সঙ্গতিপূর্ণ হবে।

Latest article