মুখে “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” স্লোগান দিয়েও নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে পারল না যোগিরাজ্য। জাতীয় মহিলা কমিশনের (National Women Commission) রিপোর্টে যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) রাজ্য উত্তরপ্রদেশ (UP)। বিজেপি (BJP) শাসিত এই ডাবল ইঞ্জিন রাজ্য যে মহিলাদের জন্য একেবারেই সুরক্ষিত নয় সেই কথা স্পষ্ট হয়ে গেলো। ২০২১ সালে সারা দেশে মহিলাদের উপর অপরাধের ঘটনা গত সাত বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ৩০ হাজার ৮৬৪টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৮২৮টি এসেছে যোগীরাজ্য থেকে। যা গোটা দেশের অর্ধেকেরও বেশি।
আরও পড়ুন-সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫তম প্রতিষ্ঠাদিবস, উত্তর থেকে দক্ষিণ উৎসবমুখর
জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সালের পর দেশজুড়ে এটাই এক বছরে নারী নির্যাতনের সর্বাধিক খতিয়ান। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকার। গোটা বছরে ৩৩ হাজার ৯০৬টি নারী নির্যাতনের অভিযোগ জমা পড়েছিল। সাত বছর পর সংখ্যাটা আবার সেই জায়গায় পৌঁছল। ২০২০ সালে অভিযোগ জমা পড়েছিল ২৩ হাজার ৭২২টি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক বছরে অভিযোগের বহর ৩০ শতাংশ বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ১৩টি অভিযোগ মহিলাদের মানসিক নির্যাতন সংক্রান্ত। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গার্হস্থ্য হিংসা। এই ধরনের ৬ হাজার ৬৩৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। নথিভুক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৯টি পণের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনাও।
আরও পড়ুন-মায়াপুরে পর্যটকের ঢল
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত বছরে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জমা হয়েছে ১ হাজার ৮১৯টি। ধর্ষণ এবং ধর্ষণের চেষ্টার নথিভুক্ত ঘটনা ১ হাজার ৬৭৫টি। গত বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিমাসে ৩ হাজার ১০০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। উত্তরপ্রদেশের পর নারী নির্যাতনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি। সেখানে ৩ হাজার ৩৩৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এরপর রয়েছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও বিহার।
অর্থাৎ, বিজেপি শাসিত বা প্রভাবিত রাজ্যগুলিতেই নারী নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ফলে মুখে “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” স্লোগান দিলেও, মোদির জমানায় মহিলাদের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে বা তাঁরা অত্যাচারিত, নির্যাতিত সেটাই প্রমাণ উত্তর প্রদেশ সহ বিভিন্ন বিজেপি শাসিত ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের এই রিপোর্ট।