প্রতিবেদন : একদিকে কোভিড, অন্যদিকে দোসর ওমিক্রন। দুই ভাইরাসের জাঁতাকলে নাভিশ্বাস বাংলা থেকে দেশের। বিগত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন কড়া নজরদারি রাখা শুরু করেছে পরিস্থিতির উপর। বছর শেষের রাতে বিধি-নিষেধের কড়াকড়িতে তার প্রমাণও মিলেছে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনকে ভাবাচ্ছে লাফিয়ে বেড়ে যাওয়া কোভিড সংক্রমণের চিত্রটা। শতাংশের হিসাবে বছরের প্রথম দিনে যা প্রায় ২৫%-৩৫%-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা চলছে। সেই সঙ্গে সতর্কতামূলক কড়া ব্যবস্থার পথও খোলা রাখছে রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন-আজ অভিষেকের মিশন ত্রিপুরা শুরু
রাজ্য সরকার যে কড়া মনোভাব নিয়ে কোভিড সংক্রমণ রুখতে নামছে, তার প্রথম ইঙ্গিত মিলেছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পরপর স্থগিত করার মধ্য দিয়ে। স্থগিত হল কোন কর্মসূচি?
এক) আজ, রবিবার, ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল জেলায় জেলায় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। রাজ্য সরকারের জনপ্রিয়তম কর্মসূচি। এই কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কবে কর্মসূচি হবে, তা পরবর্তী সময়ে সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেবে।
দুই) ৩ জানুয়ারি, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘স্টুডেন্ট ডে’ পালনের কর্মসূচি ছিল। সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচির উদ্বোধন করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। ক্রেডিট কার্ড পড়ুয়াদের হাতে তুলেও দিতেন তিনি। সেই কর্মসূচিও স্থগিত হয়েছে।
আরও পড়ুন-মুখে “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” স্লোগান দিয়েও নারী নির্যাতনে “ভারত সেরা” যোগী রাজ্য
তিন) কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে আদালতও। কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল থেকে জানানো হয়েছে, কাল, সোমবার থেকে কোর্টের অধিকাংশ কাজ ভার্চুয়াল হবে। জেলা আদালতগুলিও সেই ব্যবস্থা। আদালতে কর্মী সংখ্যাও কমিয়ে আনা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু শুনানির ক্ষেত্রে অবশ্য আংশিক উপস্থিতির কথা ভাবা হচ্ছে।
চার) বাতিল হয়েছে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সাংবাদিক সম্মেলনও।
পাঁচ) শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, ফের কোভিড সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ছে। এই অবস্থায় অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল তৈরিতে জোর দিতে বলেছেন। পাশাপাশি হোম আইসোলেশনে থাকা আক্রান্তদের জন্য স্পেশাল টিম তৈরির পরামর্শও দিয়েছে।
আরও পড়ুন-সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫তম প্রতিষ্ঠাদিবস, উত্তর থেকে দক্ষিণ উৎসবমুখর
সরকারি সিদ্ধান্ত থেকে পরিষ্কার, জমায়েতের উপর লাগাম দিতে চাইছে সরকার। এই কারণে স্কুল-কলেজ, সিনেমা হল, বার-রেস্তোরাঁতে প্রবেশ ও মেলার উপর লাগাম দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে লোকাল ট্রেন, বাস ও বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রিত করার ভাবনা চিন্তা চলছে। রাতে অবাধ গতিবিধিও বন্ধ হতে পারে। সব মিলিয়ে কড়া মনোভাব নিয়েই পর্যালোচনা চলছে। সোমবার বৈঠকের পর শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।