৪০ জনের মৃত্যু, সংসদে জবাব চাইলেই ‘নাটক’! মোদিকে পাল্টা প্রশ্ন অভিষেকের

Must read

দেশে এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন শুধুমাত্র এই রাজ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪০ জন মানুষের। যার মধ্যে কমিশনের নিয়োগ করা বিএলও-রাও রয়েছেন। তাঁরাই মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায় করেছেন। অথচ তা নিয়ে সংসদে বিরোধীরা প্রশ্ন করার আগেই ‘নাটক’ বলে এড়িয়ে যাওয়ার অজুহাত তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার মোদির ‘নাটক’ কটাক্ষের পাল্টা প্রশ্ন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। ৪০ জন মানুষের মৃত্যুর দায় কেন্দ্রের সরকার কেন নেবে না, প্রশ্ন অভিষেকের।

সোমবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে নাটক করার অভিযোগ তোলেন। কার্যত এসআইআর নিয়েই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সুর চড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন বিরোধী সাংসদরা। প্রধানমন্ত্রীর সেই ‘নাটক’ কটাক্ষের জবাব দিলেন সংসদে তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক (Abhishek Banerjee)। অভিষেকের দাবি, বিরোধীরা কোন প্রশ্ন তুলছে? অন্তত একটি বিতর্ক বা আলোচনা হোক এসআইআর বা ভোটার তালিকা সংশোধনী নিয়ে। এটাকে কী নাটক মনে করেন? যদি প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি নেতারা যদি মনে করেন মানুষের সঠিক প্রশ্ন বা মানুষের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা নাটক, তাহলে মানুষই তাঁদের উত্তর দেবেন।

যেভাবে এসআইআর প্রক্রিয়ার কুফল সাধারণ মানুষ গুণছেন তার উল্লেখ করে অভিষেকের প্রশ্ন, এখানে ৪০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধুমাত্র যেভাবে তাড়াহুড়ো করে এসআইআর রাজ্যের কোনও অংশীদারের সঙ্গে কথা না বলে চালু করা হয়েছে সেই কারণে। নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ করা বিএলও-রা এই নির্বাচন কমিশনের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছে তাঁদের মৃত্যুর জন্য। এটা কী নাটক? এই প্রশ্নের উত্তর দিন প্রধানমন্ত্রী। ৪০ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এর দায় কী কেন্দ্রের সরকার নেবে না? লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম ভরতে মানুষের আপত্তি নেই। কিন্তু তাহলে সরকারে, নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতাটা কোথায় থাকল?

আরও পড়ুন-বিশ্ব এইডস দিবসে ভয় ধরাচ্ছে মেঘালয়ের রিপোর্ট, ১০ হাজারের মধ্যে ৫০০ শিশু HIV পজিটিভ

সেই প্রসঙ্গেই মোদি জমানায় একের পর এক নাগরিক হয়রানির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। অভিষেক তুলে ধরেন, দশ বছর আগে মানুষ ডিমনিটাইজেশনের সময়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। আশা করেছিলেন যে দেশ থেকে কালো টাকা সব উদ্ধার হবে। দশ বছর পরে সেই কালো টাকার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। সরকার কী এর দায় নেবে না? সীমান্ত দিয়ে সন্ত্রাসবাদীরা ঢুকে আসছে। দেশের রাজধানীতে বিস্ফোরণ হচ্ছে। কোথায় দায় নিচ্ছে কেন্দ্রের সরকার। ৪০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধুমাত্র অপরিকল্পিত এসআইআর চালু করার জন্য।

বর্তমান কেন্দ্রের সরকারের উদ্দেশ্য যে কতটা অসৎ তা তুলে ধরে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে পার্থক্য স্পষ্ট করে দেন অভিষেক। তাঁর দাবি, এই কেন্দ্রের সরকার কোনও দায় না নিয়ে এই অপরিকল্পিত কাজের ফায়দা লুটতে চায়, যেটা একটা ভয়ঙ্কর সমন্বয়। সেখানেই বিরোধীদের কাজ হল সরকার যেন দিনের শেষে আইনের এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে নিজেদের কাজ চালায়। সরকার সেটা করছে না। যদি বিজেপি মনে করে শুধু কয়েকটা রাজ্যে ভোটে জিতে তারা এসব করতে পারে, তবে তাদের মনে রাখতে হবে যদি মানুষের ক্ষমতা থাকে তাঁদের ক্ষমতায় আনার, তবে মানুষেরই সেই ক্ষমতা রয়েছে সেই সব রাজ্য থেকে তাঁদের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার।

মোদির লম্বা চওড়া বক্তব্যের পরে অভিষেক খুব সহজ ও সাধারণ একটি প্রশ্ন করেন, আমরা চাই সংসদ চলুক। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন এটাই যে নির্বাচনে জয়ের পরেও কেন সরকার এসআইআর বা ভোটার তালিকা সংশোধনী নিয়ে কেন আলোচনায় পিছিয়ে যাচ্ছে? ৪০ জনের মৃত্যু নিয়ে যদি বিরোধীরা আলোচনা চায় সেটা নাটক? যদি পহেলগাম হামলা বা দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে আলোচনা চায় তাহলে নাটক? আমি এই মাটি থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমার দায় নেই এই মানুষগুলোর কাছে উত্তর দেওয়ার? হিসাব তো দিতে হবেই।

Latest article