নয়াদিল্লি: সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের যে চক্রান্ত করেই চলেছে মোদি সরকার, তা কার্যত ব্যর্থ করে দিল তৃণমূল। এসআইআরের নামে ভোটচুরি, ন্যায্য পাওনা থেকে বাংলাকে বঞ্চনা এবং মনরেগা খাতে বিশাল অঙ্ক কীভাবে আটকে রাখা হয়েছে— মোদি সরকারের এই ৩টি কুকীর্তিই রাজ্যসভায় রীতিমতো যুক্তি এবং পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে ধরলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সোমবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন তৃণমূল-সহ বিরোধীদের দাবি মেনে লোকসভায় এবং রাজ্যসভায় বিজেপি এসআইআর নিয়ে আলোচনা করতে না দিলেও, শেষপর্যন্ত কিন্তু রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ বন্ধ করতে পারল না তারা। রাজ্যসভায় তাঁর ভাষণ প্রসঙ্গে এর ভয়াবহতা এবং বিপজ্জনক দিক কিন্তু নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন ডেরেক। স্বাস্থ্যকর নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং তার স্বচ্ছতার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে তিনি মন্তব্য করেছেন, এই মৃত্যুমিছিল আমরা চাই না। এসআইআরের আতঙ্কে এবং মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপে বাংলায় যেভাবে সাধারণ নাগরিক এবং বিএলও-রা আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন, একের পর এক অকালমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সেকথাও উল্লেখ করে অবিলম্বে নিবিড় সংশোধন নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার দাবি জানান তিনি৷
আরও পড়ুন-মশলা বন্ড কেলেঙ্কারি, ফের নোটিশ বিজয়নকে
ডেরেক ও’ব্রায়েন আবার মনে করিয়ে দিলেন বাংলার প্রতি কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ মোদি সরকার এবং বিজেপি। মনরেগা সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার বকেয়া বিপুল পরিমাণ টাকা৷ শুধু মনরেগা খাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাপ্য ৪৩,০০০ কোটি টাকার বেশি৷ এই বিপুল পরিমাণ টাকা কবে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার? কেন দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মেনে বাংলাকে তার প্রাপ্য টাকা দেওয়া হচ্ছে না? সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তুললেন ডেরেক। রাজ্যসভার নতুন চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি সি পি রাধাকৃষ্ণনকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েই সোমবার এই ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ তাঁর সাফ কথা, বাংলার মোট বকেয়া ২ লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র৷
যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তার কথাও ব্যাখ্যা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা। দিনে দিনে কীভাবে সংসদীয় অধিবেশনের মেয়াদ কমানো হচ্ছে তা তুলে ধরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বিরোধীদের পেশ করা নোটিশ খারিজ করা, বিলগুলিকে গায়ের জোরে পাশ করার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি৷ রাজ্যসভার অভিভাবক হিসেবে নতুন চেয়ারম্যানকে গোটা বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানান ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিরোধীরা সব সময়েই সংসদ চলার পক্ষে৷
এদিকে এদিন লোকসভায় হেল্থ সিকিরিউটি, সে ন্যাশন্যাল সিকিরিউটি সেস বিলের বিরোধিতা করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর যুক্তি, হেল্থ সিকিরিউটি এবং ন্যাশন্যাল সিকিরিউটি একাকার হয়ে গেলে তার অর্থ সুস্পষ্ট হয় না। তিনি মনে করিয়ে দেন তামাক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। সেন্ট্রাল এক্সাইজ সংশোধনী বিলেরও তিনি বিরোধিতা করেন।

