নয়াদিল্লি : ফের বাংলাকে বঞ্চনা কেন্দ্রের। সেইসঙ্গে, বাংলার প্রাপ্য টাকা না দিতে নতুন করে টালবাহানা শুরু করল বিজেপি সরকার। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মনরেগা প্রকল্পের টাকা ছাড়া নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মালা রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, কীর্তি আজাদ ও সৌগত রায়ের প্রশ্নের জবাবে লোকসভায় কেন্দ্রীয় গ্রামীণ উন্নয়ন রাষ্ট্রমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ান এবার জানিয়েছেন, কলকাতা হাইকোর্টের ১৮ জুন,২০২৫-এর নির্দেশের পর পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের কাজ আবার শুরু করার জন্য তাদের বিভাগ এখন নতুন করে নিয়মকানুন তৈরি করছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পশ্চিমবঙ্গের শ্রম বাজেট বাড়ানোর আবেদন কেন্দ্রীয় সরকার মঞ্জুর করেনি। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের অজুহাত, রাজ্য সরকার তাদের দেওয়া নির্দেশগুলি মেনে চলেনি। এই কারণে ২০০৫ সালের মনরেগা আইনের ২৭ ধারা ব্যবহার করে ৯ মার্চ ২০২২ থেকে পশ্চিমবঙ্গের এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন-অসাংবিধানিক, কীভাবে গোপনীয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে কেন্দ্র? নজরদারি নিয়ে সরব তৃণমূল
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। ২৭ অক্টোবর,২০২৫-এ সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে। এর ফলে, পশ্চিমবঙ্গে প্রকল্পটি আবার চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। অথচ বাংলা-বিরোধী কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সাধারণ মানুষকে নিজেদের হকের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করে জনবিরোধী রাজনীতির কুৎসিত নমুনা রাখছে।
এনআরইজিএ সফট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের মোট বকেয়া টাকা (৮ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত) হল ৩,০৮২.৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে আছে ১,৪৫৭.২২ কোটি টাকা মজুরি বাবদ। ১,৬০৭.৬৮ কোটি টাকা উপকরণের জন্য এবং ১৭.৬২ কোটি টাকা প্রশাসনিক খরচের জন্য। তবে, এই টাকা ছাড়ার আগে কেন্দ্র সরকার তা ভাল করে যাচাই করে দেখবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যেহেতু এখন কাজ আবার শুরু করার জন্য টাকা ছাড়ার পদ্ধতি, বকেয়া মজুরি আগে দেওয়া হবে কি না— এমন সব বিষয় নিয়ে নতুন করে নিয়ম তৈরি করা হচ্ছে, তাই ঠিক কত টাকা বকেয়া আছে (১৫ সেপ্টেম্বর,২০২৫) বা কবে নাগাদ এই টাকা ছাড়া হবে, সেই বিষয়ে এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ তোয়াক্কা করেই বাংলাকে বঞ্চিত করতে এখন নতুন নিয়মের ‘ঢাল’ সামনে রাখছে বিজেপি সরকার।
তৃণমূলের অভিযোগ, পেশ করা তথ্যে ভুল আছে। বাংলার পাওনা আরও অনেক বেশি। ভুল উত্তর দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।

