নির্মমতার চূড়ান্ত নিদর্শন! শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে এসআইআরের (SIR) কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন কিন্তু পাল্টা অমানবিক আচরণ এল কমিশনের তরফে। টানা এতদিন ধরে কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন হাওড়ার সলপ-১ পঞ্চায়েতের ৬৩ নং পার্টের বিএলও অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় বেশি হাঁটাচলায় পা ফুলে গিয়ে রক্তপাত শুরু হয়।
আরও পড়ুন-ক্ষমতার অপব্যবহার! বিজেপি নেত্রীর ফ্ল্যাটে যৌনচক্র
মঙ্গলবার অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে ঊর্ধ্বতন কমিশন-কর্তার সঙ্গে কথা বলেন অনির্বাণের স্ত্রী মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বামীকে কাজ না করানোর আবেদন জানান তিনি। কিন্তু বিনিময়ে কমিশনের তরফে তাঁকে শুনতে হয় স্বামীকে অন্য কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাক। তিনি যেন বাকি কাজ শেষ করে দেন! এরপরেই আজ, বৃহস্পতিবার সিইও দফতরে সহকারী নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে এই বিষয়ে মুখ খুললেন মৌমিতা। তিনি জানান, ”আমার স্বামী এখনও কাঁকুড়গাছির হাসপাতালে ভর্তি। আমি শিক্ষকও নই, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিএলও-ও নই। তবু স্বামীর অসুস্থতার জন্য তাঁর কাজ আমাকে দিয়ে করাল কমিশন। প্রায় ৮০টিরও বেশি এনুমারেশন ফর্মের তথ্য বিএলও অ্যাপে আপলোড করতে হয়েছে আমাকে।”
আরও পড়ুন-”কথা দিলে কথা রাখি”, কেন নিজের এনুমারেশন ফর্ম ফিল আপ করেননি মুখ্যমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের অপরিকল্পিত হঠকারিতার ফলে দেশজুড়ে ঘটে যাচ্ছে একের পর এক দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার এই মর্মে কলকাতায় রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ‘বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটি’র সদস্যেরা। দফতরের বাইরে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। ব্যারিকেড ঠেলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল মৃত বিএলও-দের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। পরিবারের কোনও সদস্যকে চাকরি দিতে হবে। অন্যদিকে অতিরিক্ত কাজের চাপে বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওয়াসিম পারভেজ নামের এক বিএলও। তিনি ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের ১৪৮ নম্বর পার্টে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর কাজ করছিলেন। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

